আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহায় ঘরমুখো মানুষের যাতায়াতে দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি কমাতে ফিটনেসবিহীন লক্কড়-ঝক্কড় যানবাহন চলাচল বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি।
বুধবার (২১ জুন) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ দাবি জানান সংগঠনটির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী। একইসঙ্গে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।
ঈদে ঘরমুখো যাত্রীদের পরিবহনে রাজধানীর লক্কড়-ঝক্কড় কোনো গাড়ি ঢাকা শহরের বাইরে রিজার্ভে পাঠানো যাবে না বলে ইতোমধ্যেই রাজধানীর সব বাস মালিককে এ নির্দেশনা দিয়েছে ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি। গত ১৯ জুন ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির ওই সিদ্ধান্তের পর ঈদে ফিটনেসবিহীন লক্কড়-ঝক্কড় যানবাহন চলাচল বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাল বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি।
বিবৃতিতে যাত্রী কল্যাণ সমিতি জানায়, দেশে গণপরিবহন সংকটের সুযোগ কাজে লাগিয়ে, একসঙ্গে লাখও ঘরমুখো যাত্রী পথে নামার সুযোগ নিয়ে কতিপয় অসাধু পরিবহন মালিক প্রতি বছর ঈদে ফিটনেসবিহীন বাস ও লঞ্চ রংচং করে রাস্তায় এবং নদীতে নামায়। এসব যানবাহন মাঝপথে দুর্ঘটনায় পতিত হলে অসংখ্য মানুষের প্রাণহানি ঘটে। পথে দীর্ঘ যানজটের ভোগান্তি তৈরি হয়। এছাড়াও অতিরিক্ত মুনাফার লোভে একজন চালককে বিশ্রামহীনভাবে ১০-১২ বা ১৫ ঘণ্টা যানবাহন চালাতে বাধ্য করার কারণে এবং অদক্ষ চালক দিয়ে আনফিট যানবাহন চালানোর কারণে সড়ক ও নৌ দুর্ঘটনায় প্রতি বছর ঈদে কয়েকশ যাত্রীর প্রাণহানি ঘটে।
বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির পর্যবেক্ষণ মতে ২০২২ সালে ঈদুল আজহায় ৩১৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩৯৮ জন নিহত ৭৭৪ জন আহত হয়েছিলেন। এবারও ঈদযাত্রার বহরে মোটরসাইকেল যুক্ত থাকায় সড়ক দুর্ঘটনা ভয়াবহ হারে বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে সর্তক করে সংগঠনটি।
যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী অভিযোগ করে বলেন, কিছু অতি লোভী পরিবহন মালিক অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্য চালাতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। ভাড়া নৈরাজ্যকারীদের বিরুদ্ধে সরকার প্রতি বছর ঈদে কাগুজে বাঘের মতো হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করলেও দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণে ব্যর্থতার কারণে এবারের ঈদেও সব পথে দুই-তিন গুণ অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্য হতে পারে।
তিনি বলেন, অতিরিক্ত যাত্রী এবং বেশি ভাড়া আদায়ের লোভে প্রতি বছর সড়ক ও নৌ-পথে ফিটনেসবিহীন যানবাহনে যাত্রী বহন, পণ্যবাহী যানবাহনে যাত্রী বহন, নৌ পথে পর্যাপ্ত বয়া-বাতি ও জীবন রক্ষাকারী সরঞ্জাম না থাকায় দুর্যোগপূর্ণ নৌ মৌসুমে নৌ-পথের যাত্রীরা ভয়াবহ ঝুঁকিতে রয়েছে। লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই বন্ধে কঠোর নজরদারি রাখার দাবি জানান তিনি। এছাড়াও আনফিট ও ঝুঁকিপূর্ণ নৌযান চলাচল বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিও জানানো হয় বিবৃতিতে।