অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় সাময়িক বরখাস্ত পুলিশের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মিজানুর রহমানের ১৪ বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
বুধবার (২১ জুন) দুপুরে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬ এর বিচারক মঞ্জুরুল ইমাম এই রায় ঘোষণা করেন।
মামলাটি তদন্ত করে গত বছরের ৩০ জানুয়ারি মিজানসহ চারজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। দুদকের পক্ষ থেকে ২৭ জন সাক্ষীকে আদালতে হাজির করা হয়। বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে গত ৫ জুন রায় ঘোষণার জন্য ২১ জুন দিন ধার্য করেন আদালত।
জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০১৯ সালের ২৪ জুন মিজানসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন দুদকের পরিচালক মঞ্জুর মোর্শেদ।মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে তিন কোটি ২৮ লাখ ৬৮ হাজার টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন এবং তিন কোটি সাত লাখ পাঁচ হাজার টাকার সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগ আনা হয়।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন মিজানের স্ত্রী সোহেলিয়া আনার রত্না, তার ছোট ভাই মাহবুবুর রহমান এবং ভাগনে মাহমুদুল হাসান। আসামিদের মধ্যে ডিআইজি মিজান কারাগারে আছেন। রায় ঘোষণার সময় তাকে আদালতে হাজির করা হয়।
এর আগে ঘুষ লেনদেনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা একটি মামলায় গত বছরের ২৩ ফেব্রুয়ারি ডিআইজি মিজানুর রহমানকে তিন বছর কারাদণ্ড দেন ঢাকার আরেকটি আদালত।
২০১৯ সালে এক নারীকে জোর করে বিয়ের পর তা গোপন রাখতে নির্যাতন চালানোর অভিযোগ ওঠে পুলিশ কর্মকর্তা মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে। পরে তাকে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনারের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।
সেই ঘটনার চার মাস পর ডিআইজি মিজানের সম্পদের অনুসন্ধান শুরু করে দুর্নীতি দমন কমিশন। সেই অনুসন্ধানের দায়িত্ব পান দুদকের তৎকালীন পরিচালক এনামুল বাছির। অনুসন্ধান চলার মধ্যেই ডিআইজি মিজান দাবি করেন, তার কাছ থেকে ৪০ লাখ টাকা ঘুষ নিয়েছেন দুদক কর্মকর্তা বাছির।
পরে তাদের দুজনের কথোপকথনের কয়েকটি অডিও ক্লিপ একটি বেসরকারি টেলিভিশনে প্রচার হতে থাকে। তবে এই অডিও ক্লিপটি নিজের নয় বলে দাবি করেন দুদকের পরিচালক এনামুল বাছির। যদিও তদন্তে দুদক তার সঙ্গে মিজানের ঘুষ লেনদেরের প্রমাণ পায়।
পরে ২০১৯ সালের ১৬ জুলাই দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ সংস্থাটির পরিচালক শেখ মো. ফানাফিল্লাহ বাদী হয়ে মামলা করেন।
ঘুষের অভিযোগ ওঠার পর দুদক পরিচালক এনামুল বাছিরকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। ২০২০ সালের ২২ জুলাই এনামুল বাছিরকে গ্রেফতার করে দুদকের একটি দল। আরেক মামলায় গ্রেফতার ডিআইজি মিজানকেও পরে এই মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়। সেই মামলায় গত বছরের ২৩ ফেব্রুয়ারি ডিআইজি মিজানুর রহমান ও এনামুল বাছিরকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেন ঢাকার আরেকটি আদালত।