জান্নাতুল ফেরদৌস ওরফে লিপি নামে এক নারীকে নিজের স্ত্রী দাবি করেছেন হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মামুনুল হক। তবে লিপিকে কবে-কোথায় বিয়ে করছেন এ বিষয়ে তিনি পুলিশকে কোনো তথ্য দেননি, দেখাতে পারেননি সন্তোষজনক কোনো প্রমাণ। এছাড়াও তৃতীয় স্ত্রী এখন কোথায় আছেন, সে বিষয়েও পুলিশকে সুনির্দিষ্ট কিছুই জানাননি হেফাজতের এই নেতা।
ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনারের কার্যালয়ে তৃতীয় বিয়ে নিয়ে মামুনুলকে জিজ্ঞাসাবাদের পর এমনটাই জানিয়েছে পুলিশ। এর আগে রোববার (১৮ এপ্রিল) রাজধানীর মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া মাদরাসা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মামুনুলকে গ্রেফতার করা হয়।
মামুনুল হকের তৃতীয় বিয়ে নিয়ে তেজগাঁও বিভাগের উপ কমিশনার (ডিসি) হারুন-অর-রশিদ সাংবাদিকদের বলেন, নিজের বোনকে হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মামুনুল হকের স্ত্রী দাবি করে রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানায় ১১ এপ্রিল একটি সাধারণ ডাইরি (জিডি) করেছেন মো. শাহজাহান নামে এক ব্যক্তি। তার বোন জান্নাতুল ফেরদৌস ওরফে লিপি নিখোঁজ রয়েছেন বলেও জিডিতে উল্লেখ করা হয়। এ বিষয়ে মামুনুল হককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তিনি বলেন ‘আমি তাকে বিয়ে করেছি। সে আমার তৃতীয় স্ত্রী।’
হারুন-অর-রশিদ আরও বলেন, পর পর তিনটি বিয়ে। সোনারগাঁয়ে রয়েল রিসোর্টে যে মেয়েটিকে নিয়ে গেছেন তাকে নিজের বিয়ে করা স্ত্রী বলে দাবি করেছেন। কিন্তু আপনার স্ত্রীকে (প্রথম স্ত্রী) আপনি বলেছেন ওই নারী অন্যজনের স্ত্রী। এসব কথা কেনো বললেন, এ বিষয়ে আমরা মামুনুলকে প্রশ্ন করি। কিন্তু এসব বিষয়ে তিনি কোনো উত্তর দিতে পারেননি।
মামুনুল হককে জিজ্ঞাসাবাদের বিষিয়ে ডিসি তেজগাঁও আরও বলেন, শেষ ধাপে আমরা জিজ্ঞাসা করি, শাহজাহান নামে এক ব্যক্তি জিডি করেছেন যে তার বোনকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তার বোনকে আপনি বিয়ে করেছেন। এ বিষয়ে তিনি (মামুনুল হক) কেনো সম্পূর্ণ তথ্য জানেন না। তাকে (মামুনুল হক) আমরা জিজ্ঞাসা করি বিয়ে তো বৈধ বিষয়, তাহলে আপনার শালাকে (শাহজাহান) এ বিষয়ে কেনো জানাননি। এসব প্রশ্নেরও তিনি কোনো উত্তর দিতে পারেননি। মামুনুল শুধু বলেছেন ‘আমি তাকে বিয়ে করেছি।
জিডি করার সময় শাহজাহান বিয়ের চুক্তিনামাও দেখান। বোনকে খুঁজে পেতে তিনি পুলিশের সহায়তা চেয়েছেন। এদিকে ৩ এপ্রিলের সোনারগাঁও রয়েল রিসোর্টে জান্নাত আরা জান্নাত ওরফে ঝরনা নামে এক নারীসহ অবরুদ্ধ হন মামুনুল হক। সে নারীকে নিজের দ্বিতীয় স্ত্রী দাবি করলেও এ বিষয়ে তিনি নির্দিষ্ট কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেননি।
জানা গেছে রিসোর্টকাণ্ডের পর মামুনুল হকের বাড়ি ছেড়ে চলে গেছেন প্রথম স্ত্রী আমিনা তাইয়্যেবা। তিনি এখনও মোহাম্মদপুরের কাদেরাবাদ হাউজিংয়ে এক নম্বর সড়কে অবস্থিত মামুনুল হকের বাড়িতে আসেননি। বর্তমানে তাইয়্যেবা বাবার বাড়িতে আছেন।