জমে উঠেছে ‘আমের রাজধানী’ খ্যাত দেশের সর্ববৃহৎ চাঁপাইনবাবগঞ্জের কানসাটের আমের বাজার। এবার আমের দাম ভালো থাকায় লাভের মুখ দেখছেন বাগানমালিক, আমচাষি ও ব্যবসায়ীরা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কানসাট বাজারে প্রতিদিন ৩০-৪০ কোটি টাকার আম বেচাকেনা হচ্ছে।
গত কয়েক বছর চাঁপাইনবাবগঞ্জে প্রচুর পরিমাণে আম উৎপাদন হয়েছে। তবে ফরমালিন আতঙ্ক, সারাদেশে আমের উৎপাদন বেড়ে যাওয়া, বিদেশে কাঙ্ক্ষিত পরিমাণে রপ্তানি না হওয়া, আম পাড়ার সময়সীমা বেঁধে দেওয়া এবং আম পাকার সময় অসম্ভব গরমে একসঙ্গে আম পেকে যাওয়ায় দাম পাননি এ অঞ্চলের আমচাষিরা। তবে এবার বাজার ঘুরে দেখা গেছে ভিন্ন চিত্র। এবার উচ্চ আদালতের নির্দেশে প্রশাসনিক নজরদারির কারণে পরিপক্ব ও বিষমুক্ত আমই বাজারজাত হচ্ছে এবং দামও ভালো পাওয়া যাচ্ছে। আম বেচাকেনাকে কেন্দ্র করে চাঙা হয়ে উঠেছে নানা ধরনের ব্যবসা কার্যক্রম।
সরেজমিন দেশের বৃহত্তম কানসাট আম বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সারি সারি ভ্যান ও বাইসাইকেলে ডালিতে আম সাজিয়ে বসে আছেন চাষিরা। ক্রেতারা দরদাম করে আম কিনছেন। দেশসেরা ক্ষীরশাপাতি, ল্যাংড়া ও নানা জাতের গুটি আম বিক্রি হচ্ছে।
মান অনুযায়ী ক্ষীরশাপাতি ২ হাজার ৫০০ থেকে ৩ হাজার ৫০০ টাকায়, ল্যাংড়া ১ হাজার ৫০০ থেকে ২ হাজার, লক্ষণভোগ ৭০০ থেকে ৯০০ টাকা এবং নানা জাতের গুটি আম ৮৫০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা মণ বিক্রি হচ্ছে।
দুই ভ্যান ভর্তি করে কানসাট বাজারে আম বিক্রি করতে এসেছেন শ্যামপুর ইউনিয়নের বাবুপুর গ্রামের বাসিন্দা শরিফুল ইসলাম। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘এবার আমের দাম ভালো রয়েছে। তবে সব আমের দাম এক না। চিন্তায় আছি সব মিলিয়ে লাভবান হতে পারবো কি না।’
মুসলিমপুর এলাকার আমচাষি আনারুল ইসলাম বলেন, ‘গত কয়েক বছর ধরেই আমে লোকসান গুনছি। এবার লাভবান হতে পারবো কি না বলতে পারছি না। কারণ সব কিছুর দাম বেড়েছে। যে শ্রমিকের মজুরি গতবছর ছিল ২৫০ টাকা, এবার তা ৪০০ টাকা। যে কীটনাশক আগে ৮০০ টাকায় কিনেছি, এবার তা কিনতে হচ্ছে ১ হাজার ২০০ টাকায়।’
শিবগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, অনেক আগে থেকেই আম উৎপাদনে শিবগঞ্জ সেরা। এবারও প্রচুর আম রয়েছে এ উপজেলায়। আর কানসাট আম বাজার এ উপজেলাতেই অবস্থিত। তবে বাজারে দৈনিক কত টাকার আম বিক্রি হয় তা সঠিক বলা সম্ভব নয়। আনুমানিক বলা যায়, দৈনিক ৩০-৪০ কোটি টাকার আম বিক্রি হয় এ বাজারে।