মাদারীপুরে আদালতের নির্দেশ অমান্য করে ব্যক্তিগত জায়গায় রাস্তা নির্মাণ করার অভিযোগ উঠেছে এক ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন সদর উপজেলা ভূমি অফিসের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা।
রোববার (১১ জুন) সকালে সদর উপজেলার কালিকাপুর ইউনিয়নের ‘হোসনাবাদ মরহুম আনু পুস্তির বাড়ির নিকট হইতে আবুল সত্তার মোড়লের বাড়ি ইইয়া চরনাচনা বয়াতীবাড়ি’ পর্যন্ত মাটির রাস্তার নির্মাণের ঘটনায় পরিদর্শনে যান সার্ভেয়ার রেজাউল করিম।
এর আগে, গত ৩০ মে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ১২ জুনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশ দেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক।
মামলার নথি, ভুক্তভোগীর অভিযোগ ও এলাকা ঘুরে জানা যায়, সদর উপজেলার কালিকাপুর ইউনিয়ন পরিষদ থেকে কাবিখা প্রকল্পে ‘হোসনাবাদ মরহুম আনু পুস্তির বাড়ির নিকট হইতে আবুল সত্তার মোড়লের বাড়ি হইতে চরনাচনা বয়াতীবাড়ি’ পর্যন্ত মাটির রাস্তার সংস্কারের জন্য সদর উপজেলা পরিষদে চিঠি দেওয়া হয়। যার জন্য তিন লাখ টাকা খরচ উল্লেখ করা হয়। কিন্তু সেই প্রকল্প অনুমোদেনর আগেই চরনাচনা গ্রামের আবুল কালাম পুস্তি ও বাচ্চু পুস্তিসহ বেশ কয়েকজনের জায়গার উপর জোরপূর্বক মাটি ও গাছপালা কর্তন করে রাস্তা নির্মাণ করেন অভিযুক্ত কালিকাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ফায়েকুজ্জামান বাবুল।
গত ৬ মার্চ মাদারীপুরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে প্রতিকার চেয়ে মামলা করেন ভুক্তভোগীরা। আদালত বিষয়টি আমলে নিয়ে উল্লেখিত জায়গার উপর কাজ বন্ধ রাখতে ১৪৫ ধারা জারি এবং এ ব্যাপারে থানা পুলিশকে আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতেও নির্দেশ দেন আদালত। পরে ১৪ মার্চ ঘটনাস্থল গিয়ে কাজ বন্ধ রাখতে লিখিতভাবে নির্দেশ দেন সদর মডেল থানার এসআই মোস্তফা কামাল। এরপর কার্যক্রম বন্ধ না হলে গত ২৮ মে আল মাসুদ মিয়া নামে এক ভুক্তভোগী বাদী হয়ে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের আরেকটি মামলা করেন। আদালতের বিচারক ৩০ মে উভয়পক্ষের শুনানি শেষে ১২ জুন ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার ভুমিকে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।
ক্ষতিগ্রস্তরা বলেন, আমাদের জায়গার ওপর দিয়ে অনুমোদন হয়নি এমন প্রকল্পের নামে রাস্তা নির্মাণ করেছেন চেয়ারম্যান। ওই জমিতে পুরনো বেশ কিছু গাছপালা কর্তনও করেছেন। বিষয়টি নিয়ে বার বার আপত্তি জানালেও কোনো প্রতিকার পাইনি। পরে আদালতের দ্বারস্ত হই।
অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান ফায়েকুজ্জামান বাবুল বলেন, জনস্বার্থে আমি রাস্তা নির্মাণ করেছি। এতে কোনো অপরাধ করিনি। আদালতে মামলা আইন মেনেই চলবে। সেখানেই জবাব দিবো।
এ ব্যাপারে সদর উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার রেজাউল করিম বলেন, ব্যক্তিগত জায়গায় রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে তার সত্যতা পাওয়া গেছে। আদালতের কাছে সঠিক তথ্যই উপস্থাপন করা হবে।
মাদারীপুর সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার ভূমি মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, তদন্ত রিপোর্ট পরিবর্তনের কোনো সুযোগ নেই। এ ব্যাপারে সার্ভেয়ারকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ঘটনাস্থলে যা পাওয়া গেছে সেটাই লিপিবদ্ধ করে আদালতে জমা দেওয়া হবে।