মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ঘোষিত ভিসানীতি নিয়ে আওয়ামী লীগ ও সরকার ভীত হওয়ার কিছু নেই বলে মনে করেন ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। কারণ সংবিধান, গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও আইনের শাসনের প্রতি আওয়ামী লীগ শ্রদ্ধাশীল বলে জানান তিনি।
মঙ্গলবার (৬ জুন) দুপুরে আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে তিনি এই কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, কাঙ্ক্ষিত স্যাংশন না পেয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম চিরাচরিত ভঙ্গিতে প্রলাপ বকছেন। মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার খরচ করে তারা প্রতিনিয়ত সরকারবিরোধী কুৎসা ও বদনাম রটাচ্ছেন। বিশ্বদরবারে বাংলাদেশ ও এদেশের জনগণের মান ক্ষুণ্ন করার অপচেষ্টা চালাচ্ছেন।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ত্রিশ লাখ শহীদের প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে ম্লান করে হীন রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলে বিদেশি প্রভুদের নিকট ধরণা দিচ্ছে এবং দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র চালাচ্ছে। দেশের মানুষের প্রতি তাদের কোনো আস্থা ও বিশ্বাস নেই এবং দেশের সংবিধান, গণতন্ত্র, নির্বাচন ও গণরায়কে অবজ্ঞা করে তারা কেবল বিদেশি প্রভুদের নিকট করুণা প্রার্থনা করছে।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষিত ভিসানীতি নিয়ে আওয়ামী লীগ ও সরকার ভীত নয়। কারণ আমরা সর্বদা সংবিধান, গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও আইনের শাসনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। যদি এই ভিসানীতি যথাযথভাবে প্রয়োগ হয় তাহলে বিএনপি নেতাকর্মীদের এর আওতায় আসার আশঙ্কা রয়েছে। কেননা তারা বরাবরই গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করছে। তারা নির্বাচনীব্যবস্থাকে বাধাগ্রস্ত করতে এবং নির্বাচন প্রতিরোধের নামে সন্ত্রাসের মাধ্যমে সাংবিধানিক রাজনীতির অচলাবস্থা সৃষ্টির পাঁয়তারা করে আসছে।
কাদের বলেন, মিথ্যাচার-অপপ্রচারের মধ্য দিয়ে বিএনপি নেতারা খুনি-স্বৈরশাসক, সংবিধান ও গণতন্ত্রের হত্যাকারী স্বৈরাচার জিয়াউর রহমানকে বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা হিসেবে ভ্রান্ত মিথ তৈরি করার অপচেষ্টা করে আসছে। মূলত এই জিয়াউর রহমানই বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও সংবিধান ধ্বংস করেছে। প্যাডসর্বস্ব ভুঁইফোড়, বিবৃতিজীবী, পাকিস্তানপন্থী রাজনীতিক ও যুদ্ধাপরাধীদের ধরে এনে সরকারি গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে রাজনৈতিক দল গঠন করে পাকিস্তানপন্থীদের ক্ষমতায়ন করেছিল জিয়াউর রহমান। রাষ্ট্রীয় কার্যক্রম ও গণমাধ্যম থেকে মুক্তিযুদ্ধের জয়ধ্বনি ‘জয় বাংলা’ ও ‘জয় বঙ্গবন্ধু’-কে নির্বাসনে পাঠিয়েছিল। মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিপরীতে পাকিস্তানি দর্শনের রাজনীতির প্রচলন করেছিল। দিনের পর দিন আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে তালাবদ্ধ করে কার্যত অঘোষিতভাবে আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধ করে রাখা হয়েছিল।
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় এই যে, আজকে বিএনপির কোনো কোনো নেতার বক্তব্যে তাদের এতটাই দেউলিয়াত্বের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে যে, তাদেরকে আর কোনো রাজনৈতিক সংগঠন বলা চলে না। জনগণের প্রতি আস্থা না রেখে বিএনপি নেতৃবৃন্দ বিদেশি প্রভুদের পদলেহনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। সফল রাষ্ট্রনায়ক বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার এ ধরনের মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী খুনিগোষ্ঠী ও ষড়যন্ত্রকারীদের নিকট আত্মসমর্পণ করবে না। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে দেশবিরোধী এই অপশক্তিকে উৎখাত করা হবে।