নিষেধাজ্ঞার কারণে প্রায় আড়াই মাস (২ মাস ২০ দিন) বন্ধ থাকার পর চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়েছে।
সোমবার (৫ জুন) দুপুরে পেঁয়াজবাহী ট্রাক স্থলবন্দরে প্রবেশ করে। বন্দরের পোর্ট ম্যানেজার মাঈনুল ইসলাম এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এই কর্মকর্তা জানান, দুপুরের পর থেকে এখন পর্যন্ত পেঁয়াজ এসেছে ছয়টি ট্রাকে। আরও বেশ কয়েকটি ট্রাক প্রবেশের জন্য ভারতের মহদিপুর স্থলবন্দরে অপেক্ষায় রয়েছে।
মাঈনুল ইসলাম জানান, গত ১৫ মার্চ সবশেষ পেঁয়াজ এসেছিল সোনামসজিদ বন্দর দিয়ে। এরপরই বাংলাদেশে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ হয়ে যায়।
দেশের কৃষকরা যেন পেঁয়াজের ন্যায্যমূল্য পায় এজন্য পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ ঘোষণা করে কৃষি মন্ত্রণালয়। তবে সম্প্রতি বাজারে পেঁয়াজের বাজার অস্থির হয়ে ওঠায় আবার পেঁয়াজ আমদানির সিদ্ধান্ত নেয় মন্ত্রণালয়। রোববার (৪ জুন) কৃষি মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, সোমবার (৫ জুন) থেকে ব্যবসায়ীরা পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি পাবেন। কৃষি মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার পরদিন পেঁয়াজ আমদানি শুরু হলো। এর মধ্য দিয়ে পেঁয়াজের বাজারে যে অস্থিরতা চলছে তা অনেকটা কেটে যাবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
গত দুই বছরে দেশে পেঁয়াজের উৎপাদন বেড়েছে ১০ লাখ টনেরও বেশি। এ বছর দেশে পেঁয়াজ উৎপাদন হয়েছে ৩৪ লাখ টনের বেশি। আর বর্তমানে মজুদ আছে ১৮ লাখ ৩০ হাজার টন। কিন্তু উপযুক্ত সংরক্ষণের অভাবে বা প্রতিকূল পরিবেশের কারণে ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ পেঁয়াজ নষ্ট হয়ে যায়। দেশে বছরে পেঁয়াজের চাহিদা ২৬ থেকে ২৮ লাখ টন।
গত মে মাসে পেঁয়াজের মূল্যবৃদ্ধি বিষয়ে করণীয় নির্ধারণ সভায় জানানো হয়, বর্তমানে এক কেজি দেশি পেঁয়াজের উৎপাদন খরচ ২৮ থেকে ৩০ টাকা। ২০২১-২২ অর্থবছরে আমদানি উন্মুক্ত থাকার কারণে পেঁয়াজ আমদানি বেশি হয়েছিল। তখন দেশি পেঁয়াজের বাজারদর কম ছিল, কেজিপ্রতি ৩০ থেকে ৩৫ টাকা ছিল। কৃষকেরা কম দাম পেয়েছিল। সে জন্য পেঁয়াজ চাষে কৃষকের আগ্রহ ধরে রাখতে এবার আমদানি সাময়িকভাবে বন্ধ রাখে কৃষি মন্ত্রণালয়।
এদিকে দেশের বাজারে পেঁয়াজের ঝাঁজ বেড়েছে কয়েক গুণ। মাস-দেড়েক আগে পেঁয়াজের কেজি ছিল ৩০ থেকে ৪০ টাকা। বর্তমানে তা ৮০ থেকে ৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ক্রেতাদের অভিযোগ, বাজারের অসাধু ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের কারণে বাজারে কেজিপ্রতি পেঁয়াজ প্রায় ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু বিক্রেতাদের অভিযোগ, ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি না হওয়ায় দাম বাড়ছে। অবশেষে আমদানির সিদ্ধান্ত নেয় কৃষি মন্ত্রণালয়।