মুন্সিগঞ্জের মাওয়ায় ঘুরতে গিয়ে পদ্মা নদীতে গোসলে নেমে নিখোঁজ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী নূরুল হক নাফিউর মরদেহ ২৪ ঘণ্টা পরে উদ্ধার করেছে নৌ পুলিশ,কোষ্টগার্ড ও ফায়ারসার্ভিস ।
শনিবার বেলা ১২ টার দিকে ঘটনাস্থল থেকে আট কিলোমিটার দূরে লৌহজং উপজেলার তেউটিয়া ইউনিয়নের বর্ণ্যপাড়া এলাকার জেলে পাড়া গ্রামের পাশে পদ্মা নদী থেকে ভাসমান অবস্থায় মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
উদ্ধার হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন নিহত নূরুল হক নাফিউসহ (২৪) চার বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী। গতকাল শুক্রবার সকাল ১১টায় বন্ধুদের সাথে ট্রলারে করে পদ্মা সেতুর ১৬ নম্বর পিলারের পাশের চরে ঘুরতে যান।
সেখানে ঘুরতে যাওয়া প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থী ও ট্রলার চালকসহ ওই চারজন পদ্মায় গোসল করতে নামে। সে সময় প্রচণ্ড স্রোতে পানিতে ডুবে দুই শিক্ষার্থী নিখোঁজ হয়। পরে শুক্রবার বিকেল চারটার দিকে এদের মধ্য সব্যসাচী সৌম্যর(২৯) মরদেহ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস।
সোম্য এবং নাফিউ দুজনেই ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেক্ট্রিক্যাল এন্ড ইলেক্ট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। নিহত নূরুল হক নাফিউ রাজধানীর বাড্ডার নতুন বাজার এলাকার শরিফুল হক ভূঁইয়ার একমাত্র ছেলে।
শুক্রবার বিকালে নিহত সৌম্যরে মরদেহ উদ্ধার হলে নিখোঁজ অপর শিক্ষার্থী নাফিউকে উদ্ধারে রাত ৭টা পর্যন্ত অভিযান পরিচালিত হয়।
পরে আজ শনিবার সকাল ৭টা থেকে ২য় দিনের মত ফায়ার সার্ভিস,কোষ্ট কার্ড এবং নৌ পুলিশ যৌথভাবে পুনরায় উদ্ধার অভিযান শুরু করেন। তবে পদ্মা নদীতে প্রচন্ড স্রোত থাকায় অভিযান পরিচালনা করতে যথেষ্ট বেগ পেতে হয় বলে জানিয়েছে উদ্ধার কর্মিরা।
এরআগে পদ্মা পাড়ে স্বজনের খোঁজে নির্ঘুম রাত পার করেছেন নিহতদের পরিবারের সদস্যরা। সকাল থেকেই পদ্মার চরে অপেক্ষায় থাকে নাফিউর আত্মীয়রা। নিখোঁজের ফুপাতো ভাই মোস্তাফা নেয়ামুল হক সরকার জানান, সকাল থেকেই অপেক্ষায় ছিলাম। প্রশাসন যথেষ্ট চেষ্টা করেছে।
নিখোঁজের মামাতো ভাই বিল্লাল হোসেন জানান, বাড়িতে নাফিউর বাবা-মা কিছুক্ষণ পর পর জ্ঞান হারিয়ে ফেলছে। এখানে আমরা আত্মীয়রা সবাই অপেক্ষায় করেছি। কোষ্ট গার্ডের জুনিয়র কমিশন অফিসার এম শাজাহান জানান, সকাল ৭টা থেকে অভিযান শুরু করেছি। নদীতে প্রচন্ড স্রোতের কারণে অভিযান ব্যাহত হচ্ছিলো।
তবে উদ্ধার হওয়া নাফিউর মরদেহ ময়নাতদন্তের পর পরিবারের মাঝে হস্তান্তর করা হবে বলেও তিনি জানান।
এদিকে গতকাল শুক্রবার বিকাল ৪টায় সব্যসাচী সৌম্যরর লাশ উদ্ধার করে মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ময়না তদন্তের পরে লাশ বুঝে নেন সৌম্যর বাবা সরোজ দাস এসময়ে পদ্মার তীর যেন স্বজনদের কান্নায় পরিবেশ ভাড়ী হয়ে ওঠে।