মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতি কথা উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘কয়দিন আগেও কত লাফালাফি, এখন লাফালাফি কমে এসেছে। এখন বলেন, আমরা সংঘাত চাই না, আলাপ-আলোচনা চাই, অথচ কয়েকদিন আগেও আমাদের নেতাকর্মীদের মারধর, হামলা করেছেন।’
বিএনপি নেতাকর্মীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এখন আমরা লড়াই করছি, লড়াই চূড়ান্ত পর্যায়ে এসেছে। অগ্নি-সন্ত্রাস করবে তারা (আওয়ামী লীগ) দোষ দেবে আমাদের। তাই শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করতে হবে।
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৪২তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে সোমবার (২৯ মে) রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে আয়োজিত আলোচনা সভায় এ কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমেরিকা থেকে রেমিট্যান্স না কি বাড়তে শুরু করেছে, বেশি আসছে! কি এমন জাদু তৈরি হলো? বাংলাদেশ থেকে যারা আমেরিকায় যান, তাদের বেশির ভাগই ঘরবাড়ি বিক্রি করে যান। কেউ রেমিট্যান্স পাঠান না, রেমিট্যান্স আসে মূলত মধ্যপ্রাচ্য থেকে।
তিনি আরও বলেন, এ টাকা পাচারের টাকা, তাদের সবদিক থেকেই চুরি, এখন এসব টাকা ২ দশমিক ৫ শতাংশ ইনসেন্টিভ পাবে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজকের পরিপ্রেক্ষিতে জিয়াউর রহমান অনেক বেশি প্রাসঙ্গিক, ১৯৭৫ সালে তথা কথিত সমাজতান্ত্রিক দুর্নীতির অর্থনীতি ব্যবস্থায় থেকে দেশ উন্নয়নের দিকে নিয়ে গেছেন। তলাবিহীন ঝুঁড়িকে জিয়াউর রহমান এক বছরে সমৃদ্ধির দিকে নিয়ে গেছেন।
ফখরুল বলেন, ‘আপনাকে (শেখ হাসিনা) ক্ষমতায় রেখে নির্বাচন সুস্থ হবে না, ২০১৪ ও ২০১৮ সাল তার নজির। সংসদ বিলুপ্ত করতে হবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে।
আমরা শান্তিপূর্ণভাবে সরকারের পরিবর্তন চাই। দেশের সব মানুষকে, সব দলকে ঐক্যবদ্ধ করে এ সরকারের পতন করা হবে বলেও জানান মির্জা ফখরুল।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, বাংলাদেশকে এ সংকট থেকে উদ্ধার করতে হলে স্বৈরাচারের পতন করতে হবে। পতনের বিকল্প নেই। এরশাদের পতন হয়েছে ছাত্র জনতার আন্দোলনের মাধ্যমে, আইয়ুব খানেরও পতন হয়েছে ছাত্র জনতার আন্দোলনের মাধ্যমে- এ সরকারেরও সেভাবে পতন হবে।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, ক্ষমতাসীনদের লুটপাট ও দুর্নীতিতে দেশের অর্থনীতি আজ ধ্বংস হয়ে গেছে। আওয়ামী লীগের একজন জেলা নেতা পাচার করেছে ২ হাজার কোটি টাকা।
গণতন্ত্রহীনতা, গুম, মানবাধিকার লঙ্ঘন বর্তমানে বাংলাদেশের অবস্থা বলে বিশ্বের মানুষ জানে উল্লেখ করে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, মার্কিন ভিসানীতির মাধ্যমে ক্ষমতাসীনদের কঠিন বার্তা দেওয়া হয়েছে। এ বার্তা মূলত তিন ভাগে দেওয়া হয়েছে। প্রথম ধাপে র্যাবের ওপর শ্যাংসন দিয়ে, দ্বিতীয় ধাপে বাংলাদেশকে আমেরিকার গণতান্ত্রিক সম্মেলনে দাওয়াত না দিয়ে এবং তৃতীয় ধাপে নতুন ভিসানীতি ঘোষণা দিয়ে।
বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানির সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে দলের ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান ওমর, এজেডএম জাহিদ হোসেন, শামসুজ্জামান দুদু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আব্দুস সালাম, বিএনপি নেতা ফজলুল হক মিলন, মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, যুবদল সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু প্রমুখ বক্তব্য দেন।