হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার ৪ শিশুকে সিএনজিচালিত অটোরিকশার সঙ্গে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া ওই অটোরিকশার তার ছিঁড়ে ফেলায় তাদেরকে বেঁধে পরিবার থেকে জরিমানা নেওয়া হয়েছে বলেও জানা গেছে।
গতকাল শনিবার (২৮ মে) সন্ধ্যায় উপজেলার ধর্মঘর ইউনিয়নের বৈষ্ণবপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নির্যাতনের শিকার দুই শিশুর মামা মো. শামীম মিয়া বলেন, শনিবার সন্ধ্যায় আমি কাজীর বাজারে আমার নিজের দোকানে বসেছিলাম। হঠাৎ আমার প্রতিবন্ধী বোন এসে আমাকে জানায় তাঁর দুই ছেলেকে ধরে নিয়ে গেছে। পরে আমি দোকান থেকে মোটরসাইকেল নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেখি বেশ কয়েকজন আমার বোনের দুই ছেলে ৬ বছর ও ৭ বছর বয়সী শিশু এবং একই গ্রামের আরও ৭ এবং ৮ বছরের দুই শিশুকে হাতে রশি দিয়ে সিএনজির সঙ্গে বেঁধে রেখেছে।
তিনি আরও বলেন, শিশুদের কেন বেঁধে রাখা হয়েছে, প্রশ্ন করে মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করতে গেলে আক্তারসহ কয়েকজন আমার ওপর চড়াও হয়ে ভিডিও কেটে ফেলতে বাধ্য করেন।
আসাদ আলী সর্দার নামে স্থানীয় এক ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, শিশুরা সিএনজির স্টিয়ারিংয়ের তার ছিঁড়ে ফেলায় তাদেরকে হাতে রশি দিয়ে বেঁধে আটক করা হয়। পরে আমি এসে শিশুদের পরিবারকে ২ হাজার টাকা জরিমানা করে তাদেরকে ছেড়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করি।
এ বিষয়ে মাধবপুর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. আশরাফ আলী বলেন, ঘটনাটা জেনেছি। মাধবপুর থানায় এই বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে এবং শিশুদের প্রাথমিক কোনো চিকিৎসার প্রয়োজন আছে কি না, সে বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হয়েছে। স্থানীয় চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের অবগত করা হয়েছে, বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখার জন্য। শিশুরা যাতে করে পরবর্তীতে কোনো প্রকার আইনের আওতায় না আসে, বা আইনি ঝামেলায় না পড়ে সে ব্যাপারে আমরা সতর্ক আছি।
মাধবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ঘটনাস্থলে কাশিমনগর ফাঁড়ির ইনচার্জকে পাঠানো হয়েছে। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ বিষয়ে কাশিমনগর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আরিফুল ইসলাম বলেন, শিশুরা আক্তার মিয়ার সিএনজিচালিত অটোরিকশা নষ্ট করায় তাদেরকে হাতে বেঁধে আটকে রাখে। যা অবশ্যই একটি অপরাধ। ঘটনার পর থেকেই ওই অটোরিকশার চালক আক্তার পলাতক। আমরা অপরাধীকে আটকের চেষ্টা চালাচ্ছি।