দিন দিন দেশের প্রতিটি নিত্যপণ্যের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। যার জন্য মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয়ও একই হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। যার প্রভাব পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপরও। ব্যয়ের চাপে এক প্রকার চিড়ে চ্যাপ্টা অবস্থা তাদের।
গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) শিক্ষার্থীদেরও জীবন যাত্রার ব্যয় গত ১০ বছরে বেড়েছে একই হারে।
একইভাবে মাস শেষে হিসাব করলে দেখা যায় আগে একজন শিক্ষার্থীর খাবার বাবদ মোট খরচ হতো গড়ে ১৫০০ টাকা থেকে ২ হাজার ৪০০ টাকা। অন্য দিকে মেসে বসবাসরত শিক্ষার্থীদের আগে মাসে খরচ হতো গড়ে ২ হাজার ২০০ টাকা। কিন্তু বর্তমানে তা বেড়ে হয়েছে প্রায় ২ হাজার ৫০০ টাকা থেকে ৩ হাজার ৫০০ টাকা। অর্থাৎ বর্তমানে একজন শিক্ষার্থীকে শুধুমাত্র খাবারের জন্য মাসে আগের তুলনায় এক হাজার টাকা বেশি খরচ হচ্ছে।
অন্য দিকে প্রতি মাসে মেসে সিট ভাড়া বাবদ আগে একজন শিক্ষার্থীর খরচ হতো প্রায় ৭০০ টাকা থেকে ১২০০ টাকা। যেখানে বর্তমানে খরচ হচ্ছে ১০০০ টাকা থেকে ১ হাজার ৯০০ টাকা।
এছাড়াও যাতায়াত ও আনুষঙ্গিক বিভিন্ন খরচ মিলিয়ে একজন শিক্ষার্থীকে এক মাস চলতে হলে বর্তমানে ৪ হাজার ৫০০ থেকে ৬ হাজার টাকা খরচ করতে হচ্ছে। অথচ ১০ বছর আগে একজন শিক্ষার্থী ৩ হাজার টাকা থেকে ৪ হাজার টাকার মাধ্যমে খুব সহজেই একটি মাস পার করতে পারতো।
খোঁজ নিয়ে আরও জানা যায়, জীবনযাত্রার ব্যায় ১০ বছরের তুলনায় অনেক বাড়লেও, অপরিবর্তিত রয়েছে জীবনযাত্রার মানের।
এই অবস্থার জন্য শিক্ষার্থীদের অনেকেই লাগামহীনভাবে নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধিকে দায়ী করছেন।
এই বিষয়ে গণিত বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মাসুদ রানা বলেন, প্রতিটি জিনিসের দাম যেভাবে দিন দিন বেড়েছে তাতে ভালোভাবে দিন পার করাটাই যেন বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে গেছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা যারা মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান আছি বিষয়টি আমাদের জন্য আরও কঠিন। আমাদেরকে খরচ কমানোর জন্য দিন এক বেলা ভালো আর আরেক বেলা কোনো রকম কিছু খেয়ে চলতে হচ্ছে।
এই বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী খাদিজা জাহান তান্নী বলেন, দৈনন্দিন নিত্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধি ও প্রাত্যহিক ব্যয় অনেক বেড়েছে। সীমিত অর্থ দিয়ে শিক্ষার্থীদের জীবনযাপন চ্যালেঞ্জের হয়ে দাঁড়িয়েছে। দু’বছর আগেও যে টাকায় দিব্যি মাস পার হয়ে যেত, এখন মাসের শেষের দিকে হিমশিম খেতে হয়। বাসা ভাড়া, খাবার খরচ, পরিবহন খরচ, সেমিস্টার ফিসহ আনুষঙ্গিক উপকরণ যোগানো কঠিন হয়ে পড়েছে। সাধারণ মানুষ এখন সঞ্চয়ের কথা চিন্তাও করে না।