শ্রমিক অধ্যুষিত এলাকা হওয়ায় গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে বাড়তি নজর রাখবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এরমধ্যেও কেউ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করলে সঙ্গে সঙ্গে আইনের আওতায় আনার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ইসি মো. আলমগীর।
তিনি বলেন, গাজীপুর সিটি করপোরেশন ভোটে ৪৮০টি কেন্দ্রের মধ্যে ৩৫১টি ভোটকেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ।
মঙ্গলবার (২৩ মে) দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনের নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
কমিশনার আলমগীর বলেন, ‘বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার চেষ্টা যে করবে, সে যেই দলের বা যেই হোক না কেন, তাকে সঙ্গে সঙ্গে আইনের আওতায় আনার জন্য বলা হয়েছে। অনিয়মের মাত্রার ওপর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা কী নেওয়া হবে, তা নির্ভর করবে, ব্যক্তির সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই। অনিয়মের মাত্রার ওপর শাস্তি নির্ভর করবে।’
তিনি বলেন, আমাদের কাছে ৪৮০টি কেন্দ্রের সবগুলোই গুরুত্বপূর্ণ। তবে এর মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ ৩৫১টি কেন্দ্র। আর ১২৯টি সাধারণ কেন্দ্র হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
এখন পর্যন্ত গাজীপুরে ভোটের পরিবেশ ভালো আছে বলেও দাবি করেন তিনি।
মো. আলমগীর বলেন, শিল্প এলাকা বিধায় গাজীপুর সিটিতে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ বসবাস করেন। তাই মানুষের মধ্যে অপরাধ প্রবণতাও বেশি। তবে নির্বাচনী পরিস্থিতি এখন পর্যন্ত ভালো।
গাজীপুরে অতিরিক্ত ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘কোনো থ্রেট না থাকলেও যেহেতু শিল্প এলাকা তাই দুষ্কৃতিকারীরা বা অসৎ উদ্দেশ্য যাদের থাকে তারা যেন অন্যায় পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে না পারে তাই অতিরিক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’
তিনি বলেন, ৫৭টি ওয়ার্ডে ম্যাজিস্ট্রেট থাকবেন ৭৪ জন। জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটও থাকবে। সেখানে র্যাবের ৩০টি টিম থাকবে। বিজিবি প্রায় ১৩ প্লাটুন থাকবে। এছাড়া স্ট্রাইকিং ফোর্স পুলিশের ১৯টি ও মোবাইল টিম হিসেবে ৫৭টি টিম থাকবে। গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে ১৭ ও সাধারণ কেন্দ্রে ১৬ জনের ফোর্স থাকবে। অর্থাৎ প্রচুর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন থাকবে। যাতে কোনো রকম বিশৃঙ্খলা না হয়।
গাজীপুরের নির্বাচনে মেয়র পদে আটজন, সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৭৯ জন এবং সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২৪৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
মেয়র পদে প্রার্থীরা হলেন— মাছ প্রতীকে গণফ্রন্টের প্রার্থী আতিকুল ইসলাম, নৌকা প্রতীকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী অ্যাডভোকেট মো. আজমত উল্লা খান, লাঙ্গল প্রতীকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী এমএম নিয়াজ উদ্দিন, হাতপাখা প্রতীকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের গাজী আতাউর রহমান, গোলাপ ফুল প্রতীকে জাকের পার্টির মো. রাজু আহাম্মেদ। এছাড়া স্বতন্ত্র থেকে মেয়র পদে টেবিল ঘড়ি প্রতীকে জায়েদা খাতুন (সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের মা), ঘোড়া প্রতীকে মো. হারুন-অর-রশীদ ও হাতি প্রতীকে সরকার শাহনূর ইসলাম প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
২৫ মে বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে এই নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এতে ১১ লাখ ৭৯ হাজার ৪৭৬ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাবেন। এদের মধ্যে ৫ লাখ ৯২ হাজার ৭৬২ জন পুরুষ ও পাঁচ লাখ ৮৬ হাজার ৬৯৬ জন নারী এবং ১৮ জন রয়েছে তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার।