নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা দাবি করেছেন, ইসির ক্ষমতা খর্ব হয়নি বরং কিছুটা বেড়েছে। তিনি বলেছেন, প্রচলিত আইনেই ফলাফল ঘোষণার আগ পর্যন্ত গাইবান্ধার মতো পুরো আসনের ভোট বন্ধ করতে পারবে ইসি। এই আইনের কোনো পরিবর্তন হয়নি। নতুন আইনে ফলাফল ঘোষণার পরও একই ক্ষমতা চেয়েছিল ইসি। সেক্ষেত্রে আসনভিত্তিক না হলেও কেন্দ্রের নির্বাচন বাতিল করতে পারবে কমিশন। ইসির ক্ষমতা খর্ব হয়নি বরং কিছুটা বেড়েছে। তবে ফলাফল ঘোষণার পরও পুরো আসনের ভোট বাতিলের ক্ষমতা দিলে সুষ্ঠু নির্বাচনে আরও সহায়ক হতো।
রোববার (২১ মে) রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।
রাশেদা সুলতানা বলেন, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে (আরপিও) নির্বাচন বন্ধ করার জন্য প্রধান অনুচ্ছেদ যেটা, সেটা ৯১ এর ‘ক’। সেই ৯১ এর ক-তে, যেটা আছে, সেটা নির্বাচন পূর্ব পর্যন্ত, নির্বাচন চলা পর্যন্ত। সেখানে কমিশনের একটা ক্ষমতা দেওয়া আছে। সেই ক্ষমতায় কমিশন কোনো রকম অনিয়ম, কারচুপি যেটাই হোক, নির্বাচন কমিশনের নজরে আসলে নির্বাচন বন্ধ করে দিতে পারে। এটা আছেই আইনে।
তিনি বলেন, রিটার্নিং কর্মকর্তা ফলাফল ঘোষণার পর কমিশনে ফলাফল পাঠানোর সময় কিন্তু অনেক সময় অভিযোগ আসে। কিন্তু এই সময়টার মধ্যে কোনো অভিযোগ আসলে কমিশনের হাতে কোনো ক্ষমতা নাই। সেই অভিযোগের বিষয়ে কমিশন কিছু করতে পারে না। তাকে গেজেটটা করে দিতে হয়। যদি বড় ধরনের কোনো অভিযোগ থাকে, যে সত্যিকার অর্থেই বড় কোনো অনিয়ম ঘটে গেছে, সেটা রেখেই যদি একটা গেজেট করে দেওয়া হয়, তখন কিন্তু যারা অভিযোগ তোলেন তাদের কষ্ট থেকেই যায়। কমিশনের প্রতি একটা অনাস্থা থেকেই যায়। এই জায়গাটাতেই আমরা চিন্তা করলাম যে শূন্যতা আছে। কমিশনের হাতে কোনো সুযোগ নাই। আমরা সেখানে একটা নতুন প্রস্তাবনা পাঠালাম সংশোধনীতে, যেটা মন্ত্রিপরিষদে গেছে। আমরা পাঠালাম, ৯-এর ক, তার সঙ্গে ক-এর ক বলে একটি উপ-অনুচ্ছেদ যোগ করতে হবে। সেখানে কোনো অনিয়মের তথ্য বা অভিযোগ আসলে কমিশন সেই গেজেট নোটিফিকেশনটা স্থগিত রাখবে। এরপর তদন্ত করে যদি অভিযোগের সতত্যা প্রমাণ হয়, তখন কমিশন সুনির্দিষ্টভাবে যে জায়গায় অনিয়ম হয়েছে, সেই জায়গার ভোট বাতিল করার জন্য চাচ্ছিলাম। মন্ত্রিপরিষদ সেখানে পুরো আসনের (এন্টায়ার শব্দটা) কথাটা বাদ দিয়ে সেটা খণ্ড করে আংশিকভাবে একটা অনুমোদন দিয়েছেন। আমরা পুরো কপি এখনো দেখি নাই।
এই কমিশনার বলেন, বিভ্রান্তি যেটা হয়েছে, অনেকে মনে করছেন যে ক্ষমতাটা ছিল, নির্বাচন চলাকালীন নির্বাচন বন্ধ করে দেওয়ার যে সুযোগটা সেটা বোধহয় খর্ব হয়েছে। বিষয়টা তা না। আমি যতটুকু বুঝি, ওইটা তো হবেই না। কেননা, আমরা তো ওইটা চাই-ই নাই।
এখন আমরা চাচ্ছি, এক বা একাধিক কেন্দ্র যেখানেই হোক, রিটার্নিং কর্মকর্তার ফলাফল ঘোষণার পর এবং গেজেট হওয়ার আগ পর্যন্ত, এই মধ্যবর্তী সময়ে অভিযোগ আসলে সেটা যেন তদন্ত করে বন্ধ করতে পারি। এবং সেখানে নতুন করে ভোট হবে। যেখানে ছিলইনা, সেখানে তো কিছুটা হলেও বাড়লো। পুরোটা না হলেও কিছুটা তো অর্জন হয়েছে। পুরোটা বাতিলের ক্ষমতা পেলে ভালো। কেননা, যারা অনিয়ম করে তাদের একটা ভয় থাকতো যে ভোট বাতিল হয়ে আবার হ্যাপাটা নিতে হবে, বলেন রাশেদা সুলতানা।