সাভারের আশুলিয়ার এক নারীকে বিয়ের মিথ্যে আশ্বাসে দীর্ঘদিন যাবত ধর্ষণ ও ব্যাক্তিগত ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে মানিকগঞ্জের এক ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আশুলিয়া থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ও পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী।
শনিবার (২০ মে) ঢাকা মেইলকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম কামরুজ্জামান।
এর আগে গত মঙ্গলবার (১৬ মে) সন্ধ্যায় মামলাটি দায়ের হয়।
অভিযুক্ত ওই চেয়ারম্যানের নাম শেখ মো. শফিকুল ইসলাম (৪৩)। তিনি মানিকগঞ্জ জেলার দৌলতপুর থানার চকমিরপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান। তার বাবার নাম মৃত আবু বক্কর সিদ্দিক।
ভুক্তভোগী ওই নারী আশুলিয়া থানাধীন পলাশবাড়ী এলাকার বাসিন্দা এবং পেশায় সাবেক গার্মেন্টস কর্মকতা।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ৮ বছর পূর্বে অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলামের সাথে পরিচয় হয় ভুক্তভোগী নারীর। পরে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সম্পর্কের এক পর্যায়ে বিয়ের আশ্বাস দিয়ে ওই নারীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন শফিকুল ইসলাম। গত আট বছরে বিভিন্ন সময়ে আশুলিয়ার পলাশবাড়ী এলাকায় ওই নারীর ভাড়া বাসায় গিয়ে একাধিকবার শারিরীক সম্পর্ক হয় তাদের। সর্বশেষ গত ৪ এপ্রিল ওই নারীর ভাড়া বাসায় তাদের শারিরীক সম্পর্কের পর ওই নারী শফিকুলকে বিয়ের জন্য বলেন। এতে অস্বীকৃতি জানান শফিকুল। উল্টো শফিকুল ওই নারীকে শারিরীক সম্পর্ক গড়ে তোলার সময় গোপনে তার মুঠোফোনে ধারণ করা ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দেয়। একপর্যায়ে ওই ভিডিও ও ছবি ভুক্তভোগী ওই নারীর দুটি ফেইসবুক আইডির মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যক্তির ফেইসবুক আইডিতে পোস্ট করেছেন শফিকুল।
ভুক্তভোগী ওই নারী ঢাকা মেইলকে বলেন, ৮ বছর ধরে শফিকুলের সঙ্গে আমার সম্পর্ক। সে নিজে স্বামী স্ত্রী পরিচয় দিয়ে আশুলিয়ার পলাশবাড়ীতে আমাকে বাসা ভাড়া নিয়ে দেয়। গতমাসেও সে অনেক লোকের সামনে সামাজিকভাবে আমাকে বিয়ে করার আশ্বাস দিয়েছিল। কিন্ত এরপর অন্য এক নারীর সঙ্গে তার সম্পর্কের বিষয়টি আমি জেনে যাওয়ায় আমার উপর ক্ষিপ্ত হয় সে। এরপরও আমি তাকে বিয়ের কথা বললে কৌশলে আগে থেকে ধারণ করা ধর্ষনের ভিডিও ও আপত্তিকর ছবি আমার দুটি ফেইসবুক আইডি থেকে পোষ্ট করে আমার সম্মানহানি করেছে। তাই আমি তার বিরুদ্ধে আশুলিয়া থানায় মামলা করেছি।
অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান শেখ মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম শফিকের মুঠোফোন যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ওই নারীর সাথে বেশ কয়েকবছর আগে আমার পরিচয় হয়েছিল। সেই সূত্রে ওর সাথে একটা রিলেশন হয়। কিন্ত সেটি কোন খারাপ কিছু নয় আর তার কোন গোপন ছবি বা ভিডিও আমি ছড়িয়ে দেইনি। এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা।
আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম কামরুজ্জামান ঢাকা মেইলকে বলেন, একজন নারী মানিকগঞ্জ জেলার দৌলতপুর থানার শফিকুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। আমরা বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি। দ্রুতই এ বিষয়ে পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।