যুক্তরাষ্ট্রসহ জি-৭ জোটের দেশগুলো রাশিয়ার বিরুদ্ধে নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। রাশিয়ার ‘ওয়ার মেশিন’, লাভজনক হীরা বাণিজ্য ও ইউক্রেনে পরিচালিত সামরিক অভিযানের সঙ্গে যুক্ত বেশ কয়েকটি সংস্থা এ সংস্থার নিষেধাজ্ঞার আওতায় রয়েছে। শুক্রবার (১৯ মে) জাপানে জোটের সম্মেলনে এসব নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করা হয়।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেন ও রাশিয়ার যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও তাদের মিত্রদেশগুলো রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। এখন পর্যন্ত রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, বিভিন্ন আর্থিক খাত, ব্যবসায়ীসহ হাজারো ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ওয়াশিংটন।
শুক্রবার জি-৭ এর নেতারা জাপানের হিরোশিমায় রাশিয়ার বাৎসরিক চার থেকে পাঁচ হাজার কোটি ডলারের হীরা বাণিজ্য নিয়ে বৈঠক করেন। সেসময় তারা বিদ্যমান নিষেধাজ্ঞাগুলোকে আরও কঠোর করার মাধ্যমে আরও বেশি রুশ সংস্থা ও তাদের আন্তর্জাতিক অংশীদারদের শাস্তিমূলক বিধিনিষেধের আওতায় আনার বিষয়ে দৃঢ় মত প্রকাশ করেন।
এদিকে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এ সপ্তাহ শেষে ভার্চুয়ালি জি-৭ শীর্ষ সম্মেলনে ভাষণ দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে। তবে স্বাগতিক জাপানের জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে তিনি শেষ মুহূর্তে সশরীরে সম্মেলনে উপস্থিত হতে পারেন।
সম্মেলনের প্রথম দিনের শুরুতে রাশিয়ার ওপর আরও নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়ে জোটের দেশগুলোর কাছ থেকে সমর্থন পায় যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন প্রশাসনের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, রাশিয়া ও অন্যান্য দেশে থাকা আরও ৭০টি সংস্থাকে মার্কিন কালো তালিকাভুক্ত করা হবে।
ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, নতুন নিষেধাজ্ঞার আওতায় তিন শতাধিক ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান, নৌ ও আকাশ যোগাযোগ সংস্থা অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক বলেন, জি-৭ এর নিষেধাজ্ঞাগুলো রাশিয়াকে নতুন হুমকির মুখে ফেলবে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট চার্লস মিশেল বলেন, রাশিয়ার হীরা চিরদিনের জন্য নয়। আমরা রাশিয়ার হীরা বাণিজ্যের ওপর কড়া বিধিনিষেধ আরোপ করবো।
ইইউর সদস্য দেশ বেলজিয়াম, ভারত ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে হীরার বৃহত্তম পাইকারি বাজার রয়েছে রাশিয়ার। জি-৭ ও অন্যান্য নিষেধাজ্ঞা রাশিয়ার যুদ্ধ প্রচেষ্টাকে কতটুকু বাধাগ্রস্ত করেছে, তা নিয়ে অর্থনীতিবিদদের ভিন্ন ভিন্ন মত রয়েছে।
রাশিয়ার অর্থনীতি ২০২২ সালে দুই দশমিক ১ শতাংশ সংকুচিত হয়েছিল। এ প্রবণতা চলতি বছরের শুরুতে অব্যাহত থাকলেও, দ্রুতই খাপ খাইয়ে নিতে শুরু করে মস্কো। অনেকে বলছেন, জি-৭ নেতারা ভারত ও ব্রাজিলের নেতাদের সতর্ক করতেও এ শীর্ষ সম্মেলনকে কাজে লাগাচ্ছেন। কারণ এ দুটি আঞ্চলিক শক্তি প্রায়ই মস্কো বা চীনের সমালোচনা করতে অনিচ্ছুক থাকে।