যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ প্রায় অসম্ভব করে তুলেছিল সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের করা একটি আইন। সেই আইন আপাতত অকার্যকর। তবে শিগগিরই আসছে কঠোর আরেক আইন। তার আগেই অভিবাসনপ্রত্যাশীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে যেতে চাইছেন।
যুক্তরাষ্ট্র তাদের কাছে স্বপ্নের এক দেশ। কোনোরকমে সীমান্ত পেরিয়ে টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের ছোট্ট শহর এল পাসোতে ঢুকতে পারলেই জীবনের মোড় ঘুরে যাবে বলে বিশ্বাস করেন তারা। তাই মালগাড়ির ছাদে উঠে শুরু করছেন দীর্ঘ এবং ঝুঁকিপূর্ণ এক যাত্রা।
সাম্প্রতিক সময়ে মেক্সিকো থেকে মালগাড়িতে চড়ে যারা যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের চেষ্টা করছেন তাদের বেশিরভাগই ভেনিজুয়েলার নাগরিক।
আগেও অবশ্য এভাবে মালগাড়িতে চড়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে যাবার চেষ্টা করতেন অনেকে। পথে দুর্বৃত্তের হামলা, হাড় কাপানো শীত বা তার ঠিক বিপরীত আবহাওয়া অর্থাৎ প্রচণ্ড গরমে ট্রেনে কাটা পড়ার ঝুঁকি নিয়ে দেশান্তরের চেষ্টাকে পশুসুলভ মনে করেন অনেকে। তাই সেন্ট্রাল আমেরিকার এই দরিদ্র মানুষদের তারা ডাকেন ‘লা বেতিস্তা’ (দ্য বিস্ট) অর্থাৎ পশু নামে।
মালগাড়িতে উঠলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা একইভাবে বসে থাকতে হয়। মেক্সিকো সিটির উত্তর দিকের হুয়েতুয়েতোকা অঞ্চলের এক জায়গায় আশপাশের সব এলাকার আবর্জনা ফেলা হয়। এর ফলে সেখানে আবর্জনার যে ছোটখাটো পাহাড় গড়ে উঠেছে সেখানে গিয়ে কিছুক্ষণের জন্য থামে মালগাড়ি। ওই সুযোগে একবার নেমে শরীরে রক্তচলাচল স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করেন অভিবাসনপ্রত্যাশীরা।
সম্প্রতি খবর ছড়িয়ে পড়ে যে, করোনা মহামারি শুরুর পর যুক্তরাষ্ট্র সরকার সব অভিবাসনপ্রত্যাশীকে সীমান্ত থেকেই ফিরিয়ে দিতে যে আইন করেছিল, সেই শিরোনাম ৪২ আইন অবশেষে প্রত্যাহার করা হয়েছে। সুতরাং শিরোনাম ৪২ এর কার্যকারিতা একেবারে শেষ। ট্রাম্পের আমলে চালু হওয়া সেই আইনের কার্যকারিতা শেষ হওয়ার খবর ছড়ানো মাত্রই মেক্সিকো থেকে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে শত শত মানুষ।
তবে শিরোনাম ৪২ বিলুপ্ত হলেও আসছে নতুন আইন। সেই কঠোর আইন আসার আগেই স্বপ্নের দেশে প্রবেশের সর্বোচ্চ চেষ্টা করছেন তারা।