সাতক্ষীরার আশাশুনির কুঁন্দুড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগের তদন্ত করতে আসা কর্মকর্তার সামনেই দু’পক্ষের তর্কাতর্কি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। পরে ঘটনা স্থলে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনে।
মঙ্গলবার (১৬ মে) বেলা সাড়ে ১২টায় উপজেলার বুধহাটা ইউনিয়নের কুঁন্দুড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় চত্বরে এ ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা পূর্ণ পরিবেশ বিরাজ করছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আশাশুনির কুঁন্দুড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক কবিতা বিশ্বাস দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে বিদ্যালয়ের পুকুরের মাছ বিক্রি, বিদ্যালয়ের এস.এম. সি কমিটি হাইকোর্ট থেকে বাতিল হওয়া সত্ত্বেও পুরাতন কমিটিকে নিয়ে মিটিং করা, বিদ্যালয়ের উন্নয়নমূলক কাজ যথাযথভাবে না করাসহ বিভিন্ন অভিযোগের বিষয়ে খুলনা বিভাগীয় প্রাথমিক শিক্ষা উপ-পরিচালক মঙ্গলবার (১৬ মে) বেলা ১২টায় যশোর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে কুঁন্দুড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সরেজমিনে তদন্ত করার নির্দেশনা দেন।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বুধহাটা ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. মতিয়ার রহমান তদন্তকারী কর্মকর্তাকে বলেন, আজ স্কুলের এই অবস্থা শুধু মাত্র সাবেক প্রধান শিক্ষক মুর্শিদা খাতুনের কারণে। দুর্নীতির দায়ে মুর্শিদা খাতুনকে বহিষ্কার হয়েছেন। একথা বলতেই মুর্শিদা খাতুনের সমর্থকেরা তাদের ওপর চড়াও হন।
এর পরপরই দুর্নীতির দায়ে বহিষ্কৃত প্রধান শিক্ষক মুর্শিদা খাতুন ও বর্তমান ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক কবিতা বিশ্বাসের সমর্থকেরা বুধহাটা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক ডাবলু, আশাশুনি উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মোসলেমা খাতুন মিলি ও তদন্ত কর্মকর্তা যশোর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুস সালামের সামনেই তর্কাতর্কির একপর্যায়ে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন। পরে ঘটনা স্থলে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
তবে এ ব্যাপারে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেননি বুধহাটা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক ডাবলু।
আশাশুনি উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মোসলেমা খাতুন মিলি বলেন, স্কুলের ব্যাপারে আমি কিছু বলতে পারি না তবে পুকুরের উন্নয়নমূলক কাজে বাধা সৃষ্টি করলে সেটি আমি জনপ্রতিনিধি হয়ে মেনে নেব না। পুকুরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে এখানে তদন্ত কমিটি এসেছে। ইতোমধ্যে এই পুকুরটি বাঁধানোর জন্য একটি বড় প্রজেক্ট এসেছে।
আমি, বুধহাটা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাহবুবুল হাসান ডাবলু ও এই ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আমরা এই তিনজন সিদ্ধান্ত নিয়ে পুকুরের স্বল্প পানি নিষ্কাশন করে শুকানোর ব্যবস্থা করি। ঠিকাদার আমাকে জানান এই কাজ দ্রুত শুরু না করলে বন্ধ হয়ে যাওয়ার সম্ভবনা আছে। কাজেই আমি ইতোপূর্বে এই স্কুলের একটি নতুন ভবন হওয়ার কথা থাকলেও স্কুলের সভাপতি, প্রধান শিক্ষক, ম্যানেজিং কমিটির ভেতর দ্বন্দ্ব থাকায় ভবনটি হয়নি।
বুধহাটা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ শিহাব উদ্দিন বলেন, হাতাহাতির খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গেই ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন। এলাকার পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক অবস্থায় রয়েছে।
তদন্ত কর্মকর্তা ও যশোর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুস সালাম বলেন, তদন্তের জন্য আমি এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলছিলাম, একপর্যায়ে তারা নিজেদের মধ্যে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন। এখনও তদন্ত শেষ হয়নি, একারণে আর কিছু বলতে পারছি না।