সিলেট নগরের মিরাবাজার এলাকায় মা-ছেলে হত্যার আলোচিত মামলায় দুইজনের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। রায়ে বাসার গৃহকর্মী তানিয়া আক্তার ও তার প্রেমিক ইউসুফ খান মামুনকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ এবং এক লাখ টাকা করে জরিমানা করেছেন আদালত। এছাড়া মামুনকে আরও দুটি ধারায় অর্থদণ্ড ও কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
আজ বৃহস্পতিবার (১১ মে) দুপুরে সিলেটের অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক নুরে আলম ভূঁইয়া এ রায় দেন।
বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মিসবাউর রহমান আলম ঢাকা মেইলকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘আদালত ৩০২/৩৪ ধারায় তানিয়া ও মানুনকে মৃত্যুদণ্ড এবং এক লাখ টাকা করে জরিমানা করেছেন। এছাড়া ৩০৭ ধারায় ইউসুফ খান মানুনের ১০ বছরের কারাদন্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা এবং ৩২৩ ধারা আরও এক বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন।’
বাদী পক্ষের আইনজীবী জানান, ২০১৮ সালে মীরাবাজার এলাকায় রোকেয়া বেগম ও তাঁর ছেলে রবিউল ইসলামকে হত্যা করেন বাসার গৃহকর্মী তানিয়া আক্তার ও তার প্রেমিক ইউসুফ খান মামুন। কুপিয়ে জখম করে রোকেয়া বেগমের ছোট মেয়ে রাইসাকেও।
খুনের আগে রাতে খাবারের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অচেতন করা হয় তাদের। পরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করা হয়। পরে সকালে তাদের রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ সময় মা রোকেয়া বেগমের শরীরে ৯৬টি ও ছেলে রবিউলের শরীরে ৪১টি আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়। রাইসাকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ।
আইনজীবী আরও জানান, গৃহকর্ত্রী রোকেয়া বেগমের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে দ্বন্দ্ব থেকে বিক্ষুব্ধ হয়েই গৃহকর্মী তানিয়া তাকে হত্যা করেন।
দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে আজ বৃহস্পতিবার রায় ঘোষণা করা হয়। রায়ে দুজনের মৃত্যুদন্ড প্রদানের তথ্য নিশ্চিত করে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী জোবায়ের বখত জুবের বলেন, রায়ে তানিয়া ও তার প্রেমিক মামুনকে ফাঁসির দেন বিচারক। এছাড়াও মামুনকে দশ হাজার টাকা ও অনাদায়ে এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়।
এর আগে আসামি তানিয়া ও তার প্রেমিক মামুন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। মামলার প্রধান স্বাক্ষী ছিলেন ভিকটিম রোকেয়ার শিশুকন্যা রাইসা।
এদিকে চাপ প্রয়োগ করে দুই আসামির কাছ থেকে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি গ্রহণের অভিযোগ করে রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিলের কথা জানিয়েছেন আসামিপক্ষের আইনজীবী আসামিপক্ষের আইনজীবী দিদার আহমেদ।