বাগেরহাটের চিতলমারীতে বিয়ের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন এক প্রেমিকা। শুক্রবার (৫ মে) বেলা ১২টায় চিতলমারী উপজেলা প্রেসক্লাবে এই সংবাদ সম্মেলন হয়। এ সময় প্রেমিকার বড় বোন উপস্থিত ছিলেন।
জানা যায়, এর আগে চিতলমারীর ছন্দা রায় প্রেমিক বাগেরহাট সদর উপজেলার খালিশপুর গ্রামের অনিমেষের বাড়িতে গিয়ে অনশন করেন। সেখানে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান-মেম্বার, পুলিশসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিরা গিয়ে তাকে অনিমেষের সঙ্গে বিয়ের আশ্বাস দিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেন। পরে তার প্রেমিককে অন্যত্র বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। এরপর শুক্রবার প্রেমিকের সঙ্গে শারিরীক সম্পর্কের কথা জানিয়ে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ছন্দা রায়। তিনি এ ঘটনায় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে তিনি জানান, ২০১৭ সালে চিতলমারী উপজেলা সদর ইউনিয়নের আরুলিয়া গ্রামের আশুতোষ রায়ের মেয়ে ছন্দা রায়ের সঙ্গে বাগেরহাট সদর উপজেলার খালিশপুর গ্রামের অনন্ত মজুমদারের মেজ ছেলে অনিমেষ মুজমদারের ভালবাসার সম্পর্ক হয়। অনিমেষ তাকে বিয়ের আশ্বাস দিয়ে তার সঙ্গে শারিরীক সম্পর্ক গড়ে তোলেন।
২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে অনিমেষ ছন্দাকে বিয়ের খরচ বাবদ দুই লাখ টাকা দিতে বলেন। ছন্দা তাকে এক লাখ টাকা জোগাড় করে দেন। এরপর অনিমেষ ছন্দাকে তার (অনিমেষের) বাড়িতে গিয়ে উঠতে বলে। ২ মে বিকেলে ছন্দা অনিমেষের খালিশপুর গ্রামের বাড়িতে গিয়ে ওঠেন এবং বিয়ের প্রসঙ্গটি তোলেন। অনিমেষ তখন বাড়ি ছেড়ে পালায়। ছন্দা বিয়ের দাবিতে ওই বাড়িতে অবস্থান নেন। এ সময় অনিমেষের মা, ভাইসহ অন্যান্য লোকেরা ছন্দাকে গালিগালাজ করে টেনেহিঁচড়ে বাড়ি হতে বের করে দেওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু ছন্দা বিয়ের দাবিতে অনড় অবস্থানে থাকেন।
৩ মে বাগেরহাট সদরের বিষ্ণুপর ইউপি চেয়ারম্যান মো. বাবুল পাইক, ইউপি সদস্য কৃষ্ণ পদ এবং বাগেরহাট সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. মাইনুল ইসলাম ও অনিমেষের কাকা শান্ত মজুমদারসহ এলাকার কয়েকজন লোক বিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ছন্দাকে বাড়ি পৌঁছে দেন। এরপর অনিমেষকে অন্যত্র বিয়ে দেওয়ার জন্য তাদের বাড়ির লোকেরা চেষ্টা করে। এই অবস্থায় প্রতারণার হাত হতে রক্ষা পেতে ছন্দা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
বিষ্ণুপর ইউপি চেয়ারম্যান মো. বাবুল পাইক জানান, একটি মেয়ে ছেলের বাড়িতে গিয়ে বিয়ের দাবিতে অনশনে থাকার খবর পেয়ে থানার এসআই মাইনুলকে নিয়ে সেখানে গিয়েছিলাম। ভালবাসার সম্পর্ক না থাকলে এমনিতে একটি মেয়ে ছেলের বাড়িতে ওঠার সাহস দেখাবে না। ছেলে পক্ষকে বললে তারা ১৫ দিনের সময় চেয়েছে।
বাগেরহাট সদর থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. মাইনুল ইসলাম বলেন, ইউপি চেয়ারম্যানের ফোন পেয়ে তার সঙ্গে ওই ছেলের বাড়িতে গিয়েছিলাম। চেয়ারম্যানসহ অন্যান্য লোকেরা মেয়েটিকে অনিমেষের সঙ্গে দুই সপ্তাহ পর বিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দেয়। এরপর তিনি বাবার বাড়ি চলে যান।