৭ম গ্রেডের শ্রমিকদের জন্য ৬৫ ভাগ মূল মজুরিসহ ২২০০০ টাকা ন্যূনতম মজুরি ঘোষণা করাসহ আট দাবি জানিয়েছে ন্যাশনাল ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন সেন্টার (এনডব্লিউইউসি)।
সোমবার (১ মে) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত মানববন্ধনে এসব দাবি তুলে ধরেন ন্যাশনাল ওয়ার্কার্স ইউনিটি সেন্টার। মানববন্ধন শেষে ন্যাশনাল ওয়ার্কার্স ইউনিটি সেন্টার ও গ্রীণ বাংলা গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের যৌথ উদ্যোগে শ্রমিক সমাবেশ ও বর্ণাঢ্য র্যালি অনুষ্ঠিত হয়।
সভাপতির বক্তব্যে গ্রীণ বাংলা গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের সভাপতি সুলতানা বেগম বলেন, মুনাফালোভী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে অমানবিক নিপীড়নের শিকার শ্রমজীবী মানুষের সর্বোচ্চ ত্যাগ, শোষণ, বঞ্চনা, বৈষম্য ও জুলুমের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ শ্রমিকের ঐতিহাসিক বিজয় এই মে দিবস। যা যুগের পর যুগ সারা বিশ্বের শ্রমজীবী মানুষকে আন্দোলন সংগ্রামের প্রেরণা জুগিয়ে চলেছে। বাংলাদেশ শ্রম আইনের ১৪৯ ধারা অনুযায়ী প্রতি পাঁচ বছর পর পর ন্যূনতম মজুরি হার সুপারিশের বিধান এবং ১৪০ (ক) ধারায় বিশেষ পারিপার্শ্বিক অবস্থায় নতুনভাবে মজুরি কাঠামো ঘোষণ বিধান আছে। পাঁচ বছর পর পর মজুরি বোর্ড গঠন করে ন্যূনতম মজুরি পুনঃনির্ধারণের আইনগত বাধ্যবাধকতা থাকলেও মজুরি কাঠামো গঠনের কোনো দৃশ্যমান তৎপরতা দেখা যায়নি।
মানববন্ধনে আরও বলা হয়, বিশ্ববাজারের দোহাই এবং উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধির অজুহাতে ক্রমাগত পণ্যমূল্য বাড়ছে এবং বাড়ি ভাড়া, গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বাড়ছে। এর ফলে শ্রমিকদের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। প্রকৃত মজুরি অর্ধেকে নেমে যাওয়ায় শ্রমিকরা অপুষ্টি আর কঠিনতম জীবনযাপন করছে।
আয়োজকরা বলেন, অত্যাবশকীয় সেবা আইনের বিল প্রত্যাহার করে অত্যাবশকীয় সেবা নামে শ্রমিক ধর্মঘট আহ্বানের অধিকার হরণের প্রচেষ্টা। ভবিষ্যতে এ আইনের দোহাই দিয়ে শ্রমিকদের ন্যায়সঙ্গত দাবি আদারের যেকোনো আন্দোলন এবং সংবিধান ও শ্রম আইন স্বীকৃত অধিকার কেড়ে নেওয়ার সুযোগের বিল অবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়।
সমাবেশে তুলে ধরা দাবিগুলোর মধ্য রয়েছে
১.৭ম গ্রেডের শ্রমিকদের জন্য ৬৫ ভাগ মূল মজুরিসহ ২২ হাজার টাকা ন্যূনতম মজুরি ঘোষণা করা।
২. শ্রম আইনের সংশোধনী প্রক্রিয়ায় শ্রমিক সংগঠনের প্রস্তাবনা বিবেচনায় নিয়ে শ্রমিক বান্ধব শ্রম আইন প্রণয়ন করা।
৩. আইএলও কনভেনশন-১০২, ১৮৯ ও ১৯০ অবিলম্বে অনুসমর্থন করা।
৪. শ্রমজীবী মানুষের জন্য ভর্তুকি মূল্য রেশন ব্যবস্থা নিশ্চিত করা।
৫.শিল্পাঞ্চলে শ্রমিকদের জন্য স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে স্বাস্থ্যকালীন সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্র স্থাপন করা।
৬. প্রাতিষ্ঠানিক অপ্রাতিষ্ঠানিক সব সেক্টরে মাতৃত্বকালীন ছুটি ৬ মাসের আইন করা।
৭. আসন্ন ২০২২-২০২০ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে শ্রমিকদের জন্য সুনির্দিষ্ট করা।
৮. বাংলাদেশ শ্রমবিধিমালায় সন্নিবেশিত শ্রমিক স্বার্থবিরোধী বিধিসমূহ বাতিলপূর্বক নতুন বিধিমালা প্রণয়ন কর।
ন্যাশনাল ওয়ার্কার্স ইউনিটি সেন্টার ও গ্রীণ বাংলা গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের সভাপতি সুলতানা বেগমের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন- ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মো. ইলিয়াস, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খাদিজা রহমান, সহ-সভাপতি মিসেস সুইটি, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. ফরিদ উদ্দীন, শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক রোজিনা আক্তার সুমি, দফতর সম্পাদক রাবেয়া ইসলাম, মিরপুর আঞ্চলিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. তাহেরুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক ফারুক হোসেন, সংগঠক জোসনা বেগম, সালমা বেগম, রোকসানা, আমেনা, সোনিয়া প্রমুখ।