আসছে গাজীপুরসহ দেশের পাঁচটি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সরকারের মন্ত্রী-এমপি থেকে শুরু করে প্রার্থী যাদের মাধ্যমেই নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন হবে তাদের বিষয়ে কঠোর অবস্থানে যাওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। ইতোমধ্যে গাজীপুর সিটিতে মনোনয়ন জমা দেওয়ার সময় শোডাউন করায় আওয়ামী লীগের মেয়রপ্রার্থীকে শোকজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসি। তাকে স্বশরীরে ইসিতে এসে ব্যাখা দিতে হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর।
শুধু তাই নয়, সরকারি দলের মন্ত্রী-এমপি ও সরকারি কর্মকর্তারাও যাতে আচরণবিধি মেনে চলেন সেজন্য মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদককে চিঠি দেবে নির্বাচন কমিশন।
তফসিল অনুযায়ী আগামী ২৫ মে গাজীপুর সিটি নির্বাচন। ১২ জুন খুলনা ও বরিশাল এবং ২১ জুন রাজশাহী ও সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
ইতিমধ্যে সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার ক্ষেত্রে শোডাউন না করা, পাঁচজনের বেশি লোক নিয়ে না যাওয়ার নির্দেশনা দিয়েছে ইসি। কিন্তু অভিযোগ উঠেছে, গাজীপুরে নৌকার মেয়রপ্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খান শোডাউন করে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন।
অন্যদিকে মুক্তিযোদ্ধাবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হককে নির্বাচনে আচরণবিধি বিষয়ে সতর্ক করে চিঠি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
গাজীপুরের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. ফরিদুল ইসলাম গত বৃহস্পতিবার মন্ত্রীর একান্ত সচিব মোহাম্মদ সানোয়ার হোসেন বরাবর চিঠিটি পাঠান বলে জানা গেছে।
এদিকে রোববার (৩০ এপ্রিল) গাজীপুরের প্রার্থী ও সরকারি দলের নেতাকর্মীদের আচরণবিধি ভঙ্গের বিষয় নিয়ে বৈঠক করে নির্বাচন কমিশন।
বৈঠকের বিষয়টি জানিয়ে নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর সাংবাদিকদের বলেছেন, কমিশন আজ এ নিয়ে আলোচনা বসেছিল। যে সিদ্ধান্ত হয়েছে, সেটা হলো, যারা সরকারে থাকেন, তারাই আচরণ বিধিমালা ভঙ্গ করে থাকেন। সরকারে যারা থাকেন, তারা আরও দায়িত্বশীল আচরণ করবেন বলে আমরা আশা করি। সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে নির্বাচন কমিশনের পাশাপাশি সরকারি দলের দায়িত্বও অনেক বেশি। সেক্ষেত্রে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, কেবিনেট সেক্রেটারিকে আমরা একটা পত্র দেব, উনি যেন এটা যথাযথ কর্তৃপক্ষের সম্মতি নিয়ে যারা মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, সংসদ সদস্য আছেন, তাদের যেন অন্তত অনুরোধ রাখেন। যেন এই ধরনের কোনো আচরণবিধিমালা ভঙ্গ না হয়।
আওয়ামী লীগকে চিঠি দেওয়ার কথা জানিয়ে ইসি আলমগীর বলেন, একইভাবে সরকারি দল যেহেতু আওয়ামী লীগ, এই দলের সাধারণ সম্পাদককেও আমরা চিঠি দিয়ে অনুরোধ করব, দলের যারা আছেন, তারা যেন আচরণ বিধি মেনে চলেন, সে নির্দেশনা দেন।
মন্ত্রীপরিষদ সচিবকে অনুরোধ করে চিঠি দেওয়া হবে জানিয়ে মো. আলমগীর বলেন, আমরা যে সমস্ত চিঠি জারি করি বা আইনে কী আছে, সেটা হয়তো ওইভাবে সবাই দেখেন না। এজন্য এটা দেওয়া হবে, যেন সবাইকে তিনি অবহিত করবেন। আজকেই চিঠি দেওয়া হবে।
ইসি আলমগীর বলেন, অনেক দল রয়েছে। সরকারি দল যেহেতু এ বিষয়ে আন্তরিক। তাদের চিঠি দিয়ে অনুরাধ করব। দলের সাধারণ সম্পাদককে অনুরোধ করব যেন তাদের দলীয় সদস্যদের আচরণবিধি মেনে চলে সে ব্যবস্থা নেন।
একইভাবে সংসদ সদস্যদের বিষয়ে আচরণবিধি প্রতিপালনের বিষয়টি স্মরণ করিয়ে দিতে স্পিকারের কাছেও চিঠি দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে বলে জানান কর্মকর্তারা। শিগগির এ সংক্রান্ত চিঠি সংশ্লিষ্টদের কাছে পাঠানো হবে বলে জানান ইসি মো. আলমগীর।
এদিকে ইসির পক্ষ থেকে আচারণবিধি ভঙ্গ করলে প্রার্থীতা বাতিল করে দেওয়া হবে বলেও সতর্ক করা হয়েছে।