হেফাজতে ইসলামেরর কেন্দ্রীয় সহকারী মহাসচিব, জমিয়তে ওলামায়ে ইসলামের মহাসচিব ও ঢাকার ইসলামবাগ মাদরাসার শাইখুল হাদিস ও প্রিন্সিপাল মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দীকে আটক করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে সংগঠনটি। বুধবার (১৪ এপ্রিল) রাত ১০ টা ৫০ মিনিটে হাতিরপুলের নিজ বাসা থেকে সাদাপোশাকধারীরা তাকে তুলে নিয়ে যায় বলে গণমাধ্যমকে জানান বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র সমাজের কেন্দ্রীয় মহাসচিব এহতশামুল হক সাকি।
এ বিষয়ে ইসলামবাগ মাদরাসার ভাইস প্রিন্সিপাল মাওলানা ওমর আলী জানান, মাওলানা আফেন্দীকে তুলে নিয়ে যাওয়ার পর পরিবারের কারো সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। সাদাপোশাকধারীরা মাওলানা আফেন্দীর বাসার সবার মোবাইল নিয়ে গেছেন বলে জানিয়েছেন তার বাসার দারোয়ান।
এর আগে বুধবার সন্ধ্যায় ইফতারের আগ মুহুর্তে হেফাজতে ইসলামের সহকারী মহাসচিব, লালবাগ জামিয়া কুরআনিয়া মাদরাসার মুহাদ্দিস মুফতি সাখাওয়াত হোসাইন রাজীকে লালবাগ কেল্লার মোড়ে তাঁর বাসা থেকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায় ডিবি পুলিশের সদস্যরা। মুফতি সাখাওয়াতের গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মাহবুব আলম বলেন, সন্ধ্যায় তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সম্প্রতি হেফাজতে ইসলাম আন্দোলনের নামে যে তাণ্ডব চালিয়েছে, এসব ঘটনায় রাজধানীর একাধিক থানায় তাঁর নামে কয়েকটি মামলা হয়েছে। এসব মামলার মধ্যে কয়েকটি মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
এছাড়াও মঙ্গলবার (১৩ এপ্রিল) হেফাজতে ইসলামের নারায়ণগঞ্জ জেলা সেক্রেটারি ও মাদানীনগর মাদরাসার সিনিয়র মুহাদ্দিস মুফতি বশিরুল্লাহ ও কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-প্রচার সম্পাদক মুফতি শরিফউল্লাহকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মুফতি বশিরুল্লাহকে মঙ্গলবার রাত ১১ টায় সিদ্ধিরগঞ্জের সানারপাড় লন্ডন মার্কেট এলাকায় নির্মাণাধীন বাড়ী থেকে ও মুফতি শরিফুল্লাহকে যাত্রাবাড়ীর মীর হাজিরবাগ এলাকা থেকে ডিবি ওয়ারী বিভাগ গ্রেপ্তার করেছে বলে জানা গেছে।
মুফতি শরিফউল্লাহ ২০১৩ সালের ৬ মে যাত্রাবাড়ী থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে দায়েরকৃত মামলার এজাহারভুক্ত আসামি বলে জানা গেছে। মুফতি বশিরুল্লাহর বিরুদ্ধে ২৮ মার্চ হেফাজতে ইসলামের হরতালে সহিংসতায় নেতৃত্ব দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে। তবে তিনি মামলার এজহারভুক্ত আসামি নন।
এর আগে হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদীকে আটকের পর একটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ২০১৩ সালের ৬ মে পল্টন থানায় দায়ের করা এক মামলায় মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদীকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এ নিয়ে গত চার দিনে হেফাজতের পাঁচ কেন্দ্রীয় নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তারা হলেন – হেফাজতে ইসলামের সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল হক ইসলামাবাদী, সহকারী মহাসচিব মুফতি সাখাওয়াত হোসাইন রাজী, সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-প্রচার সম্পাদক মুফতি শরিফ উল্লাহ ও হেফাজতের নারায়ণগঞ্জ জেলার সাধারণ সম্পাদক মুফতি বশির উল্লাহ।