ফৌজদারি মামলায় ফেঁসে গেলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) তাকে অভিযুক্ত করেছে ম্যানহাটানের একটি গ্রান্ড জুরি। যদিও ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ঠিক কী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে, তা এখনো নিশ্চিত নয়। তবে বিভিন্ন মাধ্যমের খবর বলছে, সাবেক পর্নো তারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলসের মামলাতেই ফেঁসেছেন ট্রাম্প। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ফৌজদারি মামলার মুখে পড়তে চলেছেন তিনি।
খবরে বলা হচ্ছে, সাবেক পর্নো তারকা স্টর্মিকে ‘হাশ মানি’ দেওয়ার অভিযোগে শাস্তি পেতে চলেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। স্টর্মির অভিযোগ, মুখ বন্ধ করার জন্য তাকে ঘুস হিসেবে টাকা দিয়েছিলেন ট্রাম্প।
কে এই স্টর্মি ড্যানিয়েলস?
পর্নো অভিনেত্রী হিসেবে পরিচিত স্টর্মি ড্যানিয়েলসের আসল নাম স্টেফানি ক্লিফোর্ড। ২০১০ সালে তিনি লুইজিয়ানার রিপাবলিকান সিনেটর মনোনয়নের জন্য প্রতিযোগিতা করে রাজনীতিতেও নাম লিখিয়েছিলেন। ২০১১ সালে নিজের আত্মজীবনী ‘ফুল ডিসক্লোজার’ লেখেন তিনি। এটি নিয়েই মার্কিন সাপ্তাহিক ম্যাগাজিন ‘ইন টাচ’-এ সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে তিনি প্রথমবার ট্রাম্পের সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্ক থাকার কথা প্রকাশ করেন।
স্টর্মি ড্যানিয়েলস। ছবি সংগৃহীত
স্টর্মির এই সাক্ষাৎকার নিয়ে তোলপাড় পড়ে যায় গোটা যুক্তরাষ্ট্র তথা বিশ্বে। সংবাদমাধ্যমের সামনে স্টর্মি দাবি করেন, ২০০৬ সালে ট্রাম্পের সঙ্গে তার সম্পর্কের শুরু হয়েছিল। সেই বছর জুলাই মাসে একটি গলফ টুর্নামেন্টে ট্রাম্পের সঙ্গে তার প্রথম দেখা হয়। এরপরে ক্যালিফোর্নিয়া ও নেভাডার রিসোর্ট এলাকার হোটেলে তারা শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হন বলেও দাবি করেন তিনি।
পর্নো তারকার দাবি, এই শারীরিক সম্পর্কের কথা যেন কেউ জানতে না পারে, সে জন্য তাকে প্রবল চাপ দেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ২০১৬ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে মুখ বন্ধ রাখার জন্য তাকে ১ লাখ ৩০ হাজার মার্কিন ডলার ঘুস দিয়েছিলেন ট্রাম্পের আইনজীবী।
এই অভিযোগেই তদন্ত শুরু হয় সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে। তদন্ত করেন ম্যানহাটন ডিসট্রিক্ট অ্যাটর্নি আলভিন ব্র্যাগ। তারই প্রতিবেদনের ভিত্তিতে এবার অভিযুক্ত হয়েছেন ট্রাম্প। তবে ঠিক কী অভিযোগ আনা হয়েছে, তা এখনো প্রকাশ করা হয়নি।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, খুব স্বাভাবিকভাবেই আগামী বছরের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে প্রভাবিত করবে এই প্রতিবেদন। তবে ট্রাম্প আগেই জানিয়েছিলেন, তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হলেও তিনি নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাবেন। ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান দলের প্রার্থী হিসেবে লড়ার ঘোষণা দিয়েছেন এ ধনকুবের।
ট্রাম্পের আইনজীবী সুসান নিচেলিস এবং জোফেস ট্যাকোপিনা সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, তারা পূর্ণশক্তিতে এই মামলা লড়বেন।
যদিও এসবের অনেক আগেই এক বিবৃতিতে ট্রাম্প নিজেকে সম্পূর্ণরূপে নির্দোষ বলে দাবি করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, এটি যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে বিরল ঘটনা। এর আগে কখনো এই পর্যায়ে রাজনৈতিক নিপীড়ন হয়নি এবং নির্বাচনী কাজে হস্তক্ষেপ ঘটানো হয়নি। যদিও ট্রাম্প তার দাবির সপক্ষে কোনো প্রমাণ বা যুক্তি দেখাননি।