চাঁদপুরে বৈদ্যুতিক তার গায়ে পড়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মো. মিনহাজ (১৫) ও মো. শামিম (১৬) নামে দুই কিশোরের মৃত্যু হয়েছে। এসময় তাদেরকে উদ্ধার করতে এ গিয়ে গেলে হাফেজ খান (৭০) নামে আরেক বৃদ্ধ আহত হন।
বুধবার দুপুরে চাঁদপুর শহরের পুরাণ বাজার পূর্ব রামদাসদী এলাকায় খোলা মাঠে কয়েকজন কিশোর খেলতে গেলে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
মৃত মিনহাজ রামদাসদী লালুর দোকান এলাকার জাহাঙ্গীর খানের ছেলে এবং শামীম একই এলাকার আকতারের ছেলে। তারা দুজনই পুরাণ বাজার নুরিয়া পাইলট উচ্চ বিদ্যালেয়র সপ্তম শ্রেণির ছাত্র। আহত হাফেজ খান বর্তমানে চাঁদপুর সরকারি জেনারের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুপুরে কয়েকজন কিশোরসহ বাড়ির সামনের খোলা মাঠে শামীম ও মিনহাজ খেলা করছিল। এসময় হঠাৎ প্রচণ্ড বাতাস এবং বৃষ্টি শুরু হয়। ঠিক ওই সময় বাড়ির সামনের খোলা মাঠের পাশে বৈদ্যুতিক লাইনের তার ছিঁড়ে নিচে পড়ে। এতে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই ওই দুই কিশোর নিহত।
এদিকে, এ ঘটনার পর সদর হাসপাতালে নিহতদের স্বজন ও হাসপাতালের স্টাফদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে।
চাঁদপুর সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. সুশান্ত জানান, দুই কিশোরকে হাসপাতালে নিয়ে আসার পূর্বে তাদের মৃত্যু হয়েছে। আহত ব্যক্তিকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, দুর্ঘটনায় মৃত ব্যক্তিদের দেহ হাসপাতালের একটা নির্ধারিত স্থানে রেখে দিতে হয়। কারণ আমাদের নিময় হচ্ছে পোস্ট মোর্টেমের ব্যবস্থা করার জন্য স্থানীয় থানায় অবহিত করা। এ কারণে আমাদের স্টাফরা হাসপাতালের নির্ধারিত স্থানে লাশ দুটো রাখার সময় তাদের স্বজনদের লাশ নিতে না দেওয়ায় স্টাফদের ওপর হামলা করে স্বজনরা।
চাঁদপুর সদর হাসপাতালের তত্ত্বাধায়ক ডা. এ.কে.এম মাহাবুবুর রহমান জানান, অপমৃত্যু হলে স্থানীয় থানায় অবহিত করে পোস্ট মোর্টেম করতে হয়। অনেক সময় মৃত ব্যক্তির পরিবার পোস্ট মোর্টেমকে ঝামেলা মনে করে। তারা মরদেহ নিয়ে যেতে চায়। আমাদের নিময় হচ্ছে পোস্ট মোর্টেমের ব্যবস্থা করার জন্য স্থানীয় থানায় অবহিত করা। বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত ব্যক্তিদের সর্ম্পকে থানায় কেন অবহিত করা হয়েছে, এজন্য তারা আমাদের স্টাফদের ওপর হামলা করেছে। এ ঘটনায় আমাদের একজন স্টাফ গুরুতর আহত হয়েছে। সে বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
চাঁদপুর মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুর রশিদ বলেন, পুরান বাজারের পূর্ব শ্রীরকমদি এলাকায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে দুই কিশোরের মরদেহ থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। তাদের স্বজনরা ময়নাতদন্ত ছাড়া মরদেহ নিয়ে যাওয়ার জন্য হাসপাতালের কর্মচারীদের মারধর করেছে। এ ঘটনায় এক যুবককে আটক করা হয়েছে। আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।