শিশুকাল থেকেই সংগীত জগতে পদচারণা। এরপর বয়সের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে ব্যস্ততা। তার হৃদয়গ্রাহী সুরের জাদুতে মন্ত্রমুগ্ধ সব বয়সী শ্রোতা। রেকর্ডের পাল্লা ভারী হয়েছে ক্যারিয়ার জুড়ে। সেই সুরেলা সংগীতশিল্পী অলকা ইয়াগনিকের ৫৭তম জন্মদিন আজ। ১৯৬৬ সালের আজকের এই দিনে কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন কিংবদন্তি এই শিল্পী।
বিশ হাজারেরও বেশি গান রেকর্ড করা এই সংগীতশিল্পীর ব্যক্তিজীবনের একটি অজানা দিক জেনে আসা যাক। ২৭ বছর ধরে স্বামী নীরাজ কাপুরের কাছ থেকে দূরে আছেন অলকা! না, তাদের বিবাহবিচ্ছেদ ঘটেনি। কাজের সূত্রেই তাদের এই আলাদা বাস।
মাত্র ৬ বছর বয়সে, অল ইন্ডিয়া রেডিওতে প্রথম গান গেয়েছিলেন অলকা ইয়াগনিক। এরপর মায়ের সঙ্গে মুম্বাই এসে দেখা করেন চলচ্চিত্র অভিনেতা ও নির্মাতা রাজ কাপুরের সঙ্গে। অলকার মিষ্টি কণ্ঠ পছন্দ হয় রাজ কাপুরের। পরিচয় করিয়ে দেন সংগীত পরিচালক জুটি লক্ষ্মীকান্ত-পেয়ারেলালের সঙ্গে। এরপর একের পর এক হিট গান দিয়ে পুরো নব্বই দশক মাতিয়ে রাখেন এই সংগীত জাদুকর।
অলকা ইয়াগনিকের কণ্ঠে ‘টিপ-টিপ বরসা পানি’, ‘বোলে চুড়িয়া’, ‘বড়ি মুশকিল হ্যায়’, ‘তেরি চুনারিয়া’র মতো একাধিক আইকনিক গান মন কেড়েছে দর্শক-শ্রোতাদের।
সোনালি ক্যারিয়ারের পাশাপাশি তার ব্যক্তিগত জীবনও লাইমলাইটে এসেছে বারবার। অলকা ১৯৮৯ সালে শিলংয়ের ব্যবসায়ী নীরাজ কাপুরকে বিয়ে করেন। যদিও বিয়ের পর, গত ২৭ বছর ধরে স্বামীর কাছ থেকে আলাদা থাকছেন তিনি। তবে সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো বিয়ের পর দূরে থাকার কারণ কোনো মারামারি নয়, বরং দুজনের কাজ। বিয়ের পর অলকা বেশিরভাগ সময় থাকতেন মুম্বাইতে। অপর দিকে, ব্যবসার কাজে বেশিরভাগ সময় শিলং থাকতেন নীরাজ।
দূরে থাকলেও মাঝে মধ্যে সময় বের করে ঠিকই একসঙ্গে সময় কাটাতেন অলকা-নীরাজ দম্পতি। দূরত্ব তাদের ভালোবাসার পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি। তাদের একমাত্র কন্যাসন্তান সায়েশা কাপুর নিজেও বিবাহিত।
অলকা ইয়াগনিকের প্রেমের গল্প খুবই মজার। নীরাজের সঙ্গে তার প্রথম দেখা হয় রেল স্টেশনে। তারপর ধীরে ধীরে তাদের বন্ধুত্ব প্রেমে রূপ নেয়। ১৯৮৮ সালে, অলকা তার বাবা-মাকে বিয়ের কথা জানান। তার ঠিক এক বছর পর সাত পাকে বাধা পড়েন এই জুটি।
সংগীতে শ্রেষ্ঠত্বের স্বীকৃতিস্বরূপ ২ বার জাতীয় পুরস্কার ও ৭ বার ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ড জেতেন অলকা ইয়াগনিক। ফিল্মফেয়ারে শ্রেষ্ঠ নারী প্লেব্যাক সংগীতশিল্পী হিসেবে রেকর্ড ৩৬ বার মনোনীত হন তিনি। এছাড়া গত তিন বছর ধরে ‘মোস্ট স্ট্রিমড আর্টিস্ট অন ইউটিউব’ খেতাব জিতেছেন অলকা, নাম লেখান গিনেস রেকর্ডবুকে।