পটুয়াখালীর কলাপাড়া খেপুপাড়া কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের অর্থ ও সরকারি অনুদান আত্মসাতের অভিযোগে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. মাহবুবুর রহমান তালুকদারসহ পাঁচজনের নাম উল্লেখ ও কয়েকজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা হয়েছে।
মো. মাহবুবুর রহমান তালুকদার ওই মসজিদের সাবেক প্রধান উপদেষ্টা, সাবেক পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী ও পটুয়াখালী-৪ (কলাপাড়া-রাঙ্গাবালী) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য।
খেপুপাড়া কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের কার্যকরী পরিষদের সদস্য আব্দুল হান্নান ব্যাপারী বাদী হয়ে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি পটুয়াখালী জেলা ও দায়রা জজ আদালতে এ মামলাটি দায়ের করেন। পরে ওই আদালতের দায়রা জজ (ভারপ্রাপ্ত) একেএম এনামুল করিম গত ১ মার্চ মামলাটি তদন্তের জন্য দুদককে নির্দেশ দেন।
এ মামলার অন্য আসামিরা হলেন- কলাপাড়া উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান ও খেপুপাড়া কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের কার্যকরী পরিষদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এসএম রাকিবুল আহসান, তার স্ত্রী সুরাইয়া নাসরিন, ওই মসজিদ কমিটির সাবেক সহসভাপতি ও সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সুলতান মাহমুদ এবং কলাপাড়ার সাব-রেজিস্ট্রারসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৪/৫ জন।
মামলার এজাহারে বলা হয়, সাবেক সংসদ সদস্য মাহবুবুর রহমান তালুকদার পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বে থাকাকালীন কলাপাড়া কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান এসএম রাকিবুল আহসানের সঙ্গে যোগসাজশে উপজেলা প্রশাসনের সরকারি বরাদ্দ থেকে মসজিদের উন্নয়নকল্পে ২০১৫-২০১৬ অর্থবছরে ৫০ হাজার টাকা, ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরে ৩০ হাজার টাকা এবং মসজিদের ঈদগাহ মাঠের অসমাপ্ত অংশ সমাপ্তকরণ ও মাঠ ফন্টাট সলিং প্রকল্পের নামে ৫ লাখ টাকা উত্তোলন করেন। কিন্তু ওই টাকা মসজিদের অনুকূলে জমা না করে এবং কোনোরকম উন্নয়নমূলক কাজ না করে নিজেরা আত্মসাৎ করেছেন।
অন্যদিকে ২০১৪-২০১৫ অর্থবছরে গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার (কাবিখা) কর্মসূচির আওতায় সংসদ সদস্যের অনুকূলে দু শ মেট্রিক টন খাদ্য শস্যের মধ্য থেকে মসজিদ ও ঈদগাহ’র অসমাপ্ত কাজ সমাপ্তকরণ ও সোলার প্যানেল স্থাপনের জন্য ৫০ মেট্রিক টন খাদ্য শস্য ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় থেকে বরাদ্দ দেওয়া হয়। যার তৎকালীন বাজারমূল্য প্রায় ১৫ লাখ টাকা। উক্ত বরাদ্দকৃত খাদ্য শস্যের বিক্রিত অর্থ মসজিদে জমা না দিয়ে এবং কোনোরকম উন্নয়ন কাজ না করে আসামিরা আত্মসাৎ করেছেন।
এছাড়া ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে খেপুপাড়া কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের ঈদগাঁহ মাঠ উন্নয়নকল্পে বরাদ্দকৃত ২ লাখ টাকা এবং পটুয়াখালী জেলা পরিষদ থেকে ২০১৩-২০১৪ অর্থবছরে মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন, খাদেমের আবাসস্থল ও ঈদগাহ মাঠ উন্নয়নের জন্য ৪ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। কিন্তু ওই টাকাও তারা নিজেরা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেন।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে কলাপাড়া উপজেলা চেয়ারম্যান রাকিবুল আহসান বলেন, আমি যখন মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক পদে ছিলাম তখন সভাপতি ছিলেন তখনকার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)। মসজিদ কমিটি থেকে চলে আসার পর আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ এনে আমার সুনামকে ক্ষুণ্ন করার চেষ্টা করা হচ্ছে। আমি সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী। এজন্য আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার করা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে সাবেক পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, সামনে নির্বাচন। এজন্য আমাকে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলার জন্য মামলা করা হয়েছে। আমি এ বিষয়ে কিছু জানি না। বর্তমান সংসদ সদস্য এই কাজগুলো করছেন।