সাভারে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে স্ত্রী সন্তানের সামনে ছিনতাইকারীদের সঙ্গে ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে ছুরিকাঘাতে নিহত হন রাজমিস্ত্রী মো. সোহেল মিয়া (২৫)। এ ঘটনায় ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হত্যাকাণ্ডে জড়িত তিনজনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা জেলা উত্তর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
আদালতে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করেছেন গ্রেফতাররা।
রোববার (২৬ ফেব্রুয়ারী) দুপুরে ঢাকা মেইলকে এসব তথ্য জানান ঢাকা জেলা উত্তর ডিবি পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ (বিপ্লব)।
গ্রেফতাররা হলেন—ঢাকার ধামরাই উপজেলার সুয়াপুর রাজনগর এলাকার কুদ্দুস শেখের ছেলে রাসেল শেখ (২৩), বরগুনা জেলার সদর উপজেলার বদুঠাকুরানী কোটবাড়ি এলাকার মো. দুলাল গাজীর ছেলে মা. তুহিন (২২) এবং মানিকগঞ্জ জেলার সিংগাইর উপজেলার শেওরাইল এলাকার মো. নুরুল ইসলামের ছেলে সানি শুভ (২০)।
এর আগে শনিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) দিনব্যাপি ঢাকা ও মানিকগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এসময় তাদের কাছ থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যাবহৃত দুইটি ছুরি ও মাদক উদ্ধার করা হয়।
ডিবি পুলিশের ওসি জানায়, গ্রেফতার প্রত্যকেই ছিনতাই চক্রের সক্রিয় সদস্য। তারা দীর্ঘদিন যাবত সাভার বাসস্ট্যান্ড ও এর আশপাশের এলাকায় ছিনতাই করে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৪ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার ভোরে সাভারের ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের রাঙ্গাবন এলাকায় তিনজন অবস্থান করছিলেন। পরে ভোর সাড়ে ৪টার দিকে নিহত সোহেল তার স্ত্রী মুন্নী খাতুন (২৪) ও দেড় বছর বয়সী শিশুকে নিয়ে গ্রামের বাড়ি রংপুর থেকে বাসযোগে এসে এখানে নামেন। এসময় তাদের একাকী পেয়ে মুঠোফোন ও টাকাপয়সা ছিনতাইয়ের চেষ্টা করেন করেন ওই তিনজন (গ্রেফতার তিনজন)।
ওসি রিয়াজ উদ্দিন আরও বলেন, এসময় ধারালো ছুরির ভয় দেখিয়ে নিহত সোহেলের স্ত্রী মুন্নির হাতে থাকা ভ্যানিটি ব্যাগ থেকে ২ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয় ছিনতাইকারীরা। এসময় ছিনিয়ে নেয়া টাকা ফেরত পেতে ছিনতাইকারীদের সাথে হাতাহাতিতে লিপ্ত হন সোহেল। পরে তার স্ত্রী শিশু সন্তানকে কোলে নিয়ে ভয়ে সেখান থেকে দৌড়ে গিয়ে তাদের প্রতিবেশীদের ডাকতে যান এবং আনুমানিক ২৫মিনিট পর ফিরে এসে দেখেন তার স্বামী সোহেল রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তায় পরে আছে। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় আহত সোহেলকে পার্শ্ববর্তী এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় সাভার মডেল থানায় আটকদের বিরুদ্ধে হত্যা ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।