তুরস্ক ও সিরিয়ায় ভয়াবহ ভূমিকম্পে এখন পর্যন্ত ২৬ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এই সংখ্যা দ্বিগুণ হতে পারে বলে জানিয়েছেন জাতিসংঘের সাহায্যকারী সংস্থা ইউএন এইড এর প্রধান মার্টিন গ্রিফিথস।
ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত তুরস্কের আদানায় স্কাই নিউজকে এক সাক্ষাৎকারে এমন আশঙ্কার কথা জানান মার্টিন গ্রিফিথস।
গত সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) ৭.৮ ও ৭.৬ মাত্রার ভূমিকম্পে তুরস্ক ও সিরিয়ার বিস্তীর্ণ অঞ্চল ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। দশ হাজারের বেশি ভবন ধসে গেছে। হাজার হাজার মানুষ এসব ভবনের নিচে আটকা পড়েছে।
মার্টিন গ্রিফিথস বলেন, ‘আমি মনে করি সঠিকভাবে অনুমান করা কঠিন। কারণ ধ্বংসস্তূপের নিচের অবস্থা সম্পর্কে তেমন কিছুই আমরা জানি না। তবে আমি নিশ্চিত যে এই সংখ্যা দ্বিগুণ বা তারও বেশি হবে। এটা ভয়ংকর।’
তিনি বলেন, ‘এটি মর্মান্তিক। ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও অনেক মানুষ আটকা পড়ে আছে। তাদের মধ্যে কেউ কেউ এখনও বেঁচে আছে। আমরা সত্যিই মৃতের সংখ্যা গণনা শুরু করিনি।’
তুরস্ক এবং সিরিয়ায় ধ্বংসাবশেষের নিচে আটকে পড়াদের জন্য বেঁচে থাকার আশা ক্ষীণ হচ্ছে। ভূমিকম্পের প্রায় ৬ দিন পর এখনও অনেক স্থানে পৌঁছতে পারেননি উদ্ধারকারীরা। গ্রিফিথস বলেন যে, উদ্ধার প্রচেষ্টা এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।
তিনি বলেন, ভূমিকম্পের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে উদ্ধার কার্যক্রমের সঠিক সময় হলেও এখনও অনেক মানুষকে জীবিত বের করা হচ্ছে। এই উদ্ধার পর্বটি কখন বন্ধ করা হবে এবং পরবর্তী পর্যায়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া অবশ্যই অবিশ্বাস্যভাবে কঠিন হবে।’
গ্রিফিথস তুরস্কের প্রতি আন্তর্জাতিক সাহায্য প্রতিক্রিয়াকে ‘অসাধারণ এবং হৃদয়গ্রাহী’ বলে প্রশংসা করেছেন। যদিও সিরিয়ার ক্ষেত্রে বিষয়টি অনেকটাই আলাদা। দেশটি বছরের পর বছর ধরে চলা গৃহযুদ্ধের কারণে সাহায্য পেতে অসুবিধায় পড়েছে।
গ্রিফিথস বলেন, ‘গৃহযুদ্ধের বছরগুলোর কারণে এই ট্র্যাজেডি মোকাবেলা করা সিরিয়ার পক্ষে অনেক বেশি কঠিন।’
হোয়াইট হেলমেট জরুরী স্বেচ্ছাসেবক গোষ্ঠীর নেতা সিরিয়ায় জাতিসংঘের প্রতিক্রিয়ার সমালোচনা করে বলেছেন, ভূমিকম্পের পর থেকে বিদ্রোহী-নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলগুলো সংস্থার কাছ থেকে কোনও সহায়তা পায়নি।
জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের একটি রেজুলেশন অনুযায়ী অন্যান্য সীমান্ত ক্রসিং দিয়ে সিরিয়ায় সাহায্য পাঠানোর জন্য অনুমতি দেওয়া হয় না।
তবে কাউন্সিল আগামী সপ্তাহে একাধিক তুর্কি সীমান্ত ক্রসিংয়ের মাধ্যমে সিরিয়ার বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত এলাকায় সহায়তা প্রদানের অনুমতি দেবে কিনা তা নিয়ে আলোচনা করবে।