বিএনপির দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত ও সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেছেন, বিএনপির কর্মসূচির দিনে আওয়ামী লীগ শান্তি সমাবেশের নামে পাল্টা সমাবেশ ও কর্মসূচি দিয়ে সংঘাত সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে। তারা সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের দিয়ে মহড়ার মাধ্যমে দেশকে অশান্ত এবং অরাজক পরিস্থিতির দিকে নিয়ে যেতে চায়।
সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এমন অভিযোগ করেন।
প্রিন্স বলেন, এবারও তারা একই পথ অবলম্বন করেছে। বিভিন্ন জায়গায় তারা মহড়া দিয়ে সমাবেশে আগত নেতাকর্মীদের ওপর নির্মম হামলা করেছে, নেতাকর্মীদের আহত করেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী হামলাকারীদের গ্রেফতার না করে উল্টো আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হামলার শিকার বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার এবং মিথ্যা মামলা দিয়েছে। এমনকি ঘটনাস্থলে ছিলেন না, এমন অনেক নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছে।
বিএনপির এ সাংগঠনিক সম্পাদক বলেন, খুলনা বিভাগীয় সমাবেশে যোগ দিতে আসার সময় কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার নেতাকর্মীদের উপর কালীগঞ্জের বারোবাজারে আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশকারীরা হামলা চালায়। ময়মনসিংহ বিভাগীয় সমাবেশ শেষে নেতাকর্মীরা বাড়ি ফেরার সময় নগরীর মাসকান্দা বাসষ্ট্যান্ডে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করে। এতে আমাদের বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী আহত হয়।
বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, সারাদেশে গ্রেফতার ও হামলা অব্যাহত রেখেছে এ সরকার। আমরা এই গ্রেফতার, দমন-নিপীড়ন, মিথ্যা মামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে এসব বন্ধ করে গ্রেফতারকৃত নেতৃবৃন্দের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি করছি। মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে, হয়রানি বন্ধ করার দাবি জানাচ্ছি। জনবিচ্ছিন্ন সরকার গণ-আন্দোলনের ভয়ে ভীত হয়ে এই নিষ্ঠুর দমন-নিপীড়ন চালাচ্ছে। দমন-নিপীড়ন করে জনগণ এবং নেতাকর্মীদের ভয় দেখানো যাবে না। যারা সমাবেশ, পদযাত্রার মত শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিকে ভয় পায় তারা জনবিচ্ছিন্ন এবং আন্দোলনের ভয়ে ভীত। এই সরকারের পায়ের নিচে মাটি নেই, মাথার উপর থেকেও ছায়া সরে যাচ্ছে। এজন্য তারা দমন-নিপীড়ন করে আন্দোলন দমনের পথ বেছে নিয়েছে।
প্রিন্স বলেন, আমরা দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলতে চাই, গ্রেফতার, মিথ্যা মামলা, দমন করে আন্দোলন নস্যাৎ করার দিন শেষ। জনগণ আজ জেগে উঠেছে। এই সরকার জনগণের সরকার নয়। তারা গণশত্রুতে পরিণত হয়েছে। দুর্নীতি, লুটপাট করে জনগণের অর্থ পাচার করে দেশ-বিদেশে অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়ছে। অন্যদিকে সর্বগ্রাসী সংকটে জনগণ দিশেহারা। সরকার ও তার অনুগতদের দুর্নীতি, লুটপাটের কারনে বিদ্যুৎ, গ্যাসের দাম দফায় দফায় বাড়ানো হচ্ছে। সরকার ও তার অনুগতদের দুর্নীতির মাশুল দিতে হচ্ছে জনগণকে। জনগণের চরম দুর্দিনে তাদের পকেট কেটে নিজেদের দুর্নীতির ফলে সৃষ্ট ঘাটতি পূরণ করছে সরকার। অন্যদিকে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের কষাঘাতে জনজীবনে নাভিশ্বাস উঠেছে। মানুষের আয়-ইনকাম সংকুচিত হয়ে গেছে।
এমরান সালেহ প্রিন্স আরও বলেন, দেশের এই চরম দুর্দিনে আমরা আপানাদের মাধ্যমে সরকারকে দমন-নিপীড়ন করে আন্দোলন নস্যাৎ করার পথ পরিহার করার আহ্বান জানাচ্ছি এবং জনদুর্ভোগ সৃষ্টিকারী, গণতন্ত্রহরণকারী সরকারকে দেশ, জনগণ ও গণতন্ত্রের বৃহত্তর স্বার্থে সংঘাত উস্কানীর পথ পরিহার করে গণদাবি মেনে নিয়ে পদত্যাগ করে নির্দলীয়, নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের পথ সুগম করার ও জনগণের স্বাধীন ভোটাধিকারের মাধ্যমে জনপ্রতিনিধিত্ত্বশীল সরকার, সংসদ প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানাই। অন্যথায় গ্রাম, শহরের জনপদে অধিকার হারা, নিরন্ন বুভুক্ষ মানুষের যে পদধ্বনি শোনা যাচ্ছে তাতে গণঅভ্যুত্থান অবশ্যম্ভাবী।