বাংলাদেশে সম্পর্কে বিদেশি কূটনীতিকরা অযাচিতভাবে নাক গলায় বলে মনে করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন। তবে এর জন্য মিডিয়াকে দুষেছেন মন্ত্রী। বলেছেন, মিডিয়ার কারণেই তারা এদেশে নিজেদের রাজা মনে করে। মিডিয়ায় তাদের পাত্তা না দিলে তারা ঘরে বসে হুক্কা খাবে।
বুধবার (৪ জানুয়ারি) সিলেটে একটি অনুষ্ঠানে যোগদান শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন। সদর ও জকিগঞ্জ উপজেলায় কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন এবং কার্যক্রম জোরদারকরণসংক্রান্ত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন মন্ত্রী।
বাংলাদেশ সম্পর্কে বিদেশি কূটনীতিকদের বিভিন্ন মন্তব্যের জের ধরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ সম্পর্কে বিদেশিদের জ্ঞান খুব সীমিত। সবচেয়ে ভালো জ্ঞান রাখেন বাঙালিরা। অথচ বিদেশিরা যখন আমাদের কোনো পরামর্শ দেন তখন সেটি হাস্যকর। কারণ, বাংলাদেশ বিশ্বের মধ্যে অন্যতম একটি দেশ, যে দেশের মানুষ মানবতা, গণতন্ত্র আর মানবাধিকারের জন্য রক্ত দিয়েছেন। এ দেশের ৩০ লাখ মানুষ রক্ত দিয়েছেন ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য। দুনিয়ার আর কোথাও এমন নজির নেই। অথচ বিদেশিরা আসে আমাদের বুঝাতে। কিন্তু এ দেশের প্রত্যেক মানুষের হৃদয়ে।’
এ কে মোমেন বলেন, ‘তাদের দেশে নির্বাচন হলে ২৫ শতাংশ মানুষ ভোট দেয়, আর আমাদের দেশে ৭০-৮০ শতাংশ মানুষ ভোট দেন। অথচ তারা বড় বড় কথা বলেন। তারা নিজের দিকে তাকায় না। তারা তাদের নির্বাচনের সময় প্রার্থী পায় না। আর আমাদের মিডিয়াগুলো বিদেশিদের কথায় হইচই করে। তাদের নিউজ কাভার করা ব্ন্ধ করেন, তাদের পাত্তা দেবেন না। আমাদের মিডিয়া যদি ওদের কাভার করা বন্ধ করে তখন ঘরে বসে তারা খালি হুক্কা খাবে। মিডিয়ার কারণেই বিদেশিরা নিজেদের এ দেশের রাজা মনে করে।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘১৪ বছরে শেখ হাসিনার সাহস এবং ভিশনের কারণে বাংলাদেশ সর্বক্ষেত্রে অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করেছে। আমরা আমাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলো থেকে অনেক অনেক ভালো অবস্থানে এসেছি। দরিদ্র্যতা একটি বড় অভিশাপ। আমরা সেটি অর্ধেকে নামিয়ে এনেছি। বাংলাদেশ এখন দরিদ্র দেশ না। দেশে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বিরাজ করছে।’
মোমেন বলেন, ‘যেহেতু আমরা প্রতিবেশী দেশ থেকে অনেক ভালো করছি, এজন্য অনেকে আকর্ষণবোধ করছেন। অনেকে অনেকভাবে ফায়দাও লুটতে চাচ্ছেন। বিশ্বের যেসব দেশে শান্তি ও স্থিতিশীলতা আছে সেসব দেশেই উন্নতি ঘটে। বাংলাদেশেও তা ঘটছে। যেসব দেশে শান্তি ও স্থিতিশীলতা নেই, সেগুলো ধ্বংস হয়ে যায়। তবে আমাদের কিছু লোক চায় না দেশে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বিরাজ করুক। কারণ, দেশ অশান্ত থাকলে তাদের ব্যক্তিগত ফায়দা হাসিল হয়।’