বিএনপির ২৭ দফা রাজনৈতিক সংস্কারের আড়ালে যুদ্ধাপরাধী, খুনি, সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদীদের হালাল ও তাদের সঙ্গে রাজনৈতিক অংশীদারত্ব প্রতিষ্ঠার কালো দলিল বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার।
মঙ্গলবার (২০ ডিসেম্বর) এক বিবৃতিতে এ অভিমত জানিয়ে নেতৃদ্বয় বলেন, বিএনপির ১০ দফার পর ২৭ দফায় আবার প্রমাণ হলো যে জামায়াতকে সঙ্গে নিয়ে ক্ষমতা পুনর্দখলই করাই তাদের মূল উদ্দেশ্য।
জাসদ নেতৃদ্বয় বলেন, পঞ্চদশ সংশোধনীর মধ্যদিয়েই সামরিক শাসক জিয়ার মাধ্যমে সংবিধান থেকে নির্বাসিত স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং রাষ্ট্রীয় মূল চার নীতি গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা ও বাঙালি জাতীয়তাবাদ পুনঃস্থাপিত হয়েছে। বিএনপির ২৭ দফায় সংবিধান সংস্কারের কথার আড়ালে এ পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিল করে মহান মুক্তিযুদ্ধ, অতীতের ঐতিহাসিক গণআন্দোলনগুলো, দেশের সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে মীমাংসিত বিষয়কে অমীমাংসিত করার হুমকি দেওয়া হয়েছে।
তারা বলেন, বিএনপি ২৭ দফায় একইমুখে ‘বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ’ ও ‘রেইনবো ন্যাশন’ এর কথা বলা চরম দ্বৈততা ও দ্বিচারিতার পরিচায়ক। সামরিক শাসক জিয়া কুখ্যাত দ্বি-জাতিতত্ত্বভিত্তিক বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ চাপিয়ে মুক্তিযুদ্ধের মধ্যদিয়ে ধর্মের নামে জাতিকে বিভক্ত করার অপপ্রয়াস করেছিলেন। বিএনপি ‘ন্যাশনাল রিকনসিলিয়েশন’ কথার আড়ালে ১৯৭১ সালে জাতির ওপর সংঘটিত ইতিহাসের বর্বরতম যুদ্ধাপরাধ, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড, ৩ নভেম্বর চার জাতীয় নেতা হত্যাকাণ্ড, কর্নেল তাহের বীর উত্তমসহ শত শত মুক্তিযোদ্ধা অফিসার-সৈনিক হত্যা, ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলাকারীদের অপরাধ হালাল করা এবং তাদের সঙ্গে রাজনৈতিক অংশীদারত্ব গড়ে তোলার অভিলাষ ফুটে উঠেছে।
নেতৃদ্বয় বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধ ও অতীতের ঐতিহাসিক গণআন্দোলন মীমাংসিত বিষয়গুলো, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসসহ জাতীয় ইতিহাস-ঐতিহ্য-সংস্কৃতি, সংবিধানের চার মূলনীতি অস্বীকার করা, সংবিধান-রাষ্ট্র-সমাজে সাম্প্রদায়িকতাসহ পাকিস্তানপন্থা চাপিয়ে দেওয়া, যুদ্ধাপরাধী-খুনি-অপিরাধীদের হালাল করার অপপ্রয়াসই বাংলাদেশের রাজনীতিতে মহাবিভক্তি তৈরি করেছে। বিএনপি এসব বিষয়ে একটি কথাও বলেনি। বিএনপি ২৭ দফায় ধর্ম যার যার রাষ্ট্র সবার কথা বললেও রাষ্ট্রীয় মূলনীতি হিসাবে ধর্মনিরপেক্ষতার বিষয়ে নিরব থেকেছে।