বিশ্বকাপ শিরোপা জয়ের লক্ষ্যে কাতারে পা রেখেছিল টানা ৩৬ ম্যাচে জয় পাওয়া দলটি। বিশ্বকাপ মিশনের শুরুতেই সৌদি আরবের বিপক্ষে হেরে হোঁচট খায় আর্জেন্টিনা। সেই পরাজয়ের পর নিজেদের শক্তির জানান দিয়ে টানা চারটি ম্যাচ জয়ে সেমিফাইনালে উঠে দুবারের চ্যাম্পিয়নরা। বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠার লড়াইয়ে গতবারের রানার্সআপ ক্রোয়েশিয়াকে নিয়ে রীতিমত ছেলেখেলা করেছে আলবিসেলেস্তেরা। লিওনেল মেসি ও ইউলিয়ান আলভারেজের জাদুতে ক্রোয়াটদের ৩-০ গোলে উড়িয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করেছে লিওনেল স্ক্যালোনির দল।
ফাইনালের যাবার লড়াইয়ে শুরু থেকে ধীরে এগোতে থাকে দুই দল। মধ্যমাঠের নিয়ন্ত্রণ রাখতে ছোট ছোট পাসে আক্রমণ শানাতে থাকে উভয় দল। ম্যাচের ২৪ মিনিটে আর্জেন্টাইন তারকা ফার্নান্দেজের শট রুখে দেন ক্রোয়াট গোলরক্ষক ডমিনিক লিভাকোভিচ।
অন্যদিকে প্রথমার্ধে ক্রোয়েশিয়ার প্রথম আক্রমণ ম্যাচের ৩০ তম মিনিটে। ক্রোয়াট ফরোয়ার্ড ইভান পেরিসিচের সেই বল লব বারপোস্ট ঘেঁষে যায়। উল্টো ৩১ মিনিটে পেনাল্টি পায় আর্জেন্টিনা। ওয়ান টু ওয়ানে আলভারেজকে ফাউল করেন গোলরক্ষক লিভাকোভিচ। তিনি দেখেন হলুদ কার্ড। পেনাল্টির সুযোগে এগিয়ে যায় আর্জেন্টিনা।
অবশ্য পেনাল্টি থেকে এবার আর গোল করতে ভুল করেননি আর্জেন্টাইন তারকা। এই গোলে বাতিস্তুতাকে পেছনে ফেলে বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার সর্বোচ্চ গোলদাতা বনে যান মেসি। বিশ্ব আসরে মেসির গোলসংখ্যা এখন ১১টি।
গোল পেয়ে ম্যাচে আক্রমণের গতি বাড়ায় আলবিসেলেস্তেরা। ৩৮ মিনিটে কাউন্টার অ্যাটাকে দ্বিতীয় গোল পায় তারা। এবার গোল পান আলভারেজ। ৪২ মিনিটে কর্ণার থেকে মাথা ছোঁয়ান আলভারেজ৷ সেই যাত্রায় রক্ষা করেন লিভাকোভিচ। তবে বাকি সময়ে ক্রোয়েশিয়া চেষ্টা করলেও আর শোধ করতে পারেনি গোল। প্রথমার্ধে উভয় দল আর গোলের দেখা না পেলে ২-০ গোল নিয়ে বিরতিতে যায় দুই দল।
দ্বিতীয়ার্ধে ফিরে ম্যাচে ফিরতে মরিয়া হয়ে ওঠে ক্রোয়েশিয়া। ব্যবধান কমানোর চেয়ে উল্টো আরেক গোল হজম করে বসে মদ্রিচ্ররা।
ম্যাচের ৬৯ মিনিটে দারুণভাবে মাঝমাঠ থেকে একা বল নিয়ে ডি-বক্সের ভেতরে আলভারেজকে পাস দেন মেসি। এই স্ট্রাইকার দারুণ ফিনিশিংয়ে আর্জেন্টিনাকে ৩-০ ব্যবধানে এগিয়ে দেন ম্যান সিটির এই তারকা। এতে কাতার বিশ্বকাপে ৪র্থ গোল পেয়ে গেলেন আলভারেজের। আর মেসির ৮ম এসিস্ট।
৩ গোলে পিছিয়ে থেকে গোল শোধের চেষ্টা করে ক্রোয়াটরা। তবে ৭৬ মিনিটে পেরেসিচের দূরপাল্লার দারুণ শট সেভ করেন এমি মার্টিনেজ। ৭৮ নিনিটে আবারো ওরসিচের শট চলে যায় গোলবারের উপর দিয়ে।
৮৪ মিনিটে ডি বক্সের বাইরে থেকে ফ্রি কিক পেলে দ্রুত কিক নিয়ে বল ডি বক্সের ভেতরে পান ম্যাকএলিস্টার। তার ডান পায়ের শট বাম গোল বারের সামান্য বাইরে দিয়ে চলে যায়। শেষ দিকে ক্রোয়েটরা চেষ্টা করলেও সুযোগ তৈরি করতে পারেনি তারা। ফলে ৩-০ গোলের জয়ে বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠে মেসি-ডি মারিয়ারা।