নয়াপল্টনে গত ৭ ডিসেম্বর পুলিশ ও বিএনপি নেতা-কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের পর দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যে হামলা ও লুটপাট করা হয়েছে সেটিকে ‘রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস’ বলে অভিহিত করেছেন গণতন্ত্র মঞ্চের শীর্ষ নেতারা। তাদের দাবি, আওয়ামী লীগ যে রাজনৈতিক সংস্কৃতি চালু করেছে, তা ভয়াবহ। তারা মানুষকে উসকানি দিয়ে গৃহযুদ্ধের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
সোমবার (১২ ডিসেম্বর) দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় পরিদর্শন শেষে সংবাদ সম্মেলনে তারা এসব কথা বলেন।
গণতন্ত্র মঞ্চের শীর্ষ নেতা ও নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, ভাসানী অনুসারী পরিষদের শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, গণঅধিকার পরিষদের নুরুল হক নুর, জেএসডি শহীদ উদ্দীন মাহমুদ স্বপন প্রমুখ নেতারা বিএনপির ক্ষতিগ্রস্ত কেন্দ্রীয় কার্যালয় পরিদর্শন করেন। তারা প্রত্যেকটি ক্ষতিগ্রস্ত স্থান পরিদর্শন শেষে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
মঞ্চের নেতারা অবিলম্বে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, মির্জা ফখরুল, মির্জা আব্বাসসহ আটক সব নেতা-কর্মীর মুক্তি ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান।
মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, বিএনপি নেতা-কর্মীরা যথেষ্ট ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছে। তারা শান্তিপূর্ণভাবে গণসমাবেশ শেষ করেছে। এজন্য তাদের ধন্যবাদ। আজকে পুলিশ হলো ডাকাত। তারা যা করেছে এটা নজিরবিহীন। জিয়াউর রহমানের ম্যুরাল ভাঙা হলো। এটা কোনো সভ্য দেশে ভাবা যায়? এ ধরনের ঘটনার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। পুরো জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে গণঅভ্যুত্থান ঘটিয়ে সরকারের পতন ঘটাতে হবে।
সাইফুল হক বলেন, বিএনপির অফিসে যারা হামলা ও তছনছ করেছে তাদের অবিলম্বে আইনের আওতায় আনতে হবে। দায়ী পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। বিএনপির প্রত্যেকটি নেতা-কর্মীর প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করছি। সেই সঙ্গে সরকারের প্রতি আহ্বান, আপনারা নিজেরাও দুঃখ প্রকাশ করুন। তা না হলে গণজাগরণের মধ্য দিয়েই আপনাদের বিদায় হবে।
জোনায়েদ সাকি বলেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যেভাবে হামলা চালিয়ে লন্ডভন্ড করা হয়েছে, সেটা একেবারেই রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস। তারা জিয়ার ম্যুরাল ভাঙচুরের চেষ্টা করেছে। আওয়ামী লীগ যে রাজনৈতিক সংস্কৃতি চালু করছে তা ভয়াবহ।
সরকারের পায়ের তলায় মাটি নেই দাবি করে সাকি বলেন, তাদের অবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে।
শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু বলেন, আমরা সংহতি জানাতে এসেছি। যা দেখলাম ৭১’র তাণ্ডবলীলাকে স্মরণ করিয়ে দেয়। এই সরকারের পতন ছাড়া দেশের মানুষের মুক্তি আসবে না।
নুরুল হক নুর বলেন, যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী, সংসদে আছেন, তাদেরকেও পদত্যাগ করার আহ্বান জানাই। এই ফ্যাসিস্ট সরকারের অবিলম্বে পদত্যাগ ঘটাতে হবে। তা না হলে সবার ওপর আঘাত আসবে।
এ সময় বিএনপির নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান, ভারপ্রাপ্ত দপ্তর সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স।