গোলাপবাগ খেলার মাঠের কোনও ধরনের অবকাঠামোগত ক্ষয়ক্ষতি হলে তার ক্ষতিপূরণ প্রদানের শর্তে বিএনপিকে মাঠ ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। শুক্রবার রাতে এ কথা জানিয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। এর আগে, রাজধানীর গোলাপবাগ মাঠ সমাবেশের জন্য বরাদ্দ চেয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) কাছে আবেদন করে বিএনপি।
শুক্রবার (৯ ডিসেম্বর) রাতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত দফতর সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স স্বাক্ষরিত আবেদনে বলা হয়েছে, আগামী ১০.১২.২০২২ তারিখে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশ আয়োজনের জন্য গোলাপবাগ মাঠ বরাদ্দের জন্য অনুরোধ করছি। উল্লেখ্য, ইতিমধ্যে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কর্তৃক গোলাপবাগ মাঠে বিএনপির উদ্যোগে ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশ অনুষ্ঠানের জন্য সম্মতি পাওয়া গেছে।
এর আগে, ডিএসসিসির জনসংযোগ কর্মকর্তা আবু নাছের গণমাধ্যমে পাঠানো এক চিঠিতে বলেন, গোলাপবাগ খেলার মাঠের উন্নয়নে ‘ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের বিভিন্ন অবকাঠামো উন্নয়ন (মেগা)’ শীর্ষক একটি প্রকল্প চলমান রয়েছে। প্রকল্পের আওতায় গোলাপবাগ খেলার মাঠে সীমানা প্রাচীর ও বেষ্টনী, প্যাভিলিয়ন, ড্রেসিং রুম, বাস্কেটবল গ্রাউন্ড, নর্দমা, হাঁটার পথ, পাঠাগার ভবন ও বাজার (মার্কেট বিল্ডিং) ইত্যাদি অনুষঙ্গের উন্নয়নসহ এ মাঠকে শুধু খেলাধুলার জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। চিঠিতে আরও বলা হয়, মাঠের উন্নয়নে প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে, যা প্রায় শেষের পথে। শিগগিরই এই মাঠ উদ্বোধনে তারিখ নির্ধারণ করার পর্যায়ে রয়েছে। সুতরাং প্রকল্পের এই পর্যায়ে গোলাপবাগ খেলার মাঠে রাজনৈতিক সমাবেশ আয়োজন করা হলে রাষ্ট্রীয় সম্পদ বিনষ্ট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
গত ক’দিন ধরে নানা টানাপড়েনের পর গোলাপবাগ মাঠ বিএনপির সমাবেশ স্থল হিসেবে নির্ধারণ করা হয়। বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশের স্থান নিয়ে শুরু থেকেই দেখা দেয় জটিলতা। পুলিশের পক্ষ থেকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ঠিক করে দেয়া হলেও বিএনপির দাবি ছিল, নয়াপল্টন অথবা আরামবাগে সমাবেশ করবেন তারা। এরই মধ্যে বুধবার (৭ ডিসেম্বর) নয়াপল্টনে বিএনপি নেতাকর্মীরা পুলিশের সাথে সংঘর্ষে জড়ায়। এতে হতাহতের ঘটনা ঘটে। গুলিবিদ্ধ হয়ে মকবুল নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়। গ্রেফতার হয় বিএনপির বেশকিছু নেতাকর্মী।
বৃহস্পতিবার কমলাপুর স্টেডিয়ামে সমাবেশ করার অনুমতি চায় বিএনপি। অন্যদিকে, পুলিশ মিরপুর বাংলা কলেজ মাঠে সমাবেশ করার প্রস্তাব দেয়। এ নিয়ে ডিএমপির সাথে বিএনপির ছয় সদস্যের একটি প্রতিনিধি দলের দীর্ঘ আলোচনা হয়। ওইদিন রাতেই স্থান দুটি পরিদর্শন করে প্রতিনিধি দলটি। তবে কমলাপুর স্টেডিয়ামে অনুমতি না পেয়ে পুলিশের প্রস্তাবকৃত স্থান মিরপুর বাংলা কলেজের মাঠের বদলে গোলাপবাগ মাঠে সমাবেশের অনুমতি চেয়ে আবেদন করে দলটি। অবশেষে রাজধানীর গোলাপবাগ মাঠে সমাবেশের জন্য সম্মত হয় উভয় পক্ষ। স্থান নির্ধারণের পর শনিবার বিকেল থেকেই সেখানে জড়ো হতে থাকে বিএনপির নেতাকর্মীরা। শুরু হয় মঞ্চ তৈরির কাজ।