অবৈধ অভিবাসনের জোয়ার ঠেকাতে এখন থেকে ব্রিটেনের সঙ্গে যুগপৎভাবে কাজ করবে দেশটির প্রতিবেশী চার ইউরোপীয় রাষ্ট্র— বেলজিয়াম, ফ্রান্স, জার্মানি ও নেদারল্যান্ডস।
এক্ষেত্রে প্রাথমিক পর্যায়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্সকে পৃথক করা সাগর ইংলিশ চ্যানেল দিয়ে অভিবাসীদের আগমন ঠেকাতে মনযোগ দেওয়া হবে বলে ঐকমত্যেও পৌঁছেছে এই পাঁচ দেশ।
উত্তরপশ্চিম ইউরোপের এই চার দেশকে একত্রে ‘ক্যালিস গ্রুপ’ বলা হয়। বৃহস্পতিবার বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে ব্রিটেনের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুয়েল্লা ব্রেভারম্যানের সঙ্গে ইউরোপের এই ‘ক্যালিস গ্রুপের’ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠক হয়। সে বৈঠকেই তারা এই ঐকমত্যে পৌঁছান বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
ইউরোপ মহাদেশভূক্ত দেশ হলেও মহাদেশের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত নয় যুক্তরাজ্য। ইউরোপের মূল ভূখন্ডস্থিত দেশ ফ্রান্স থেকে যুক্তরাজ্যকে পৃথক করেছে ইংলিশ চ্যানেল নামের ছোট ও সংকীর্ণ একটি সাগর। এই সাগরটির দৈর্ঘ্য প্রায় ৫৬২ কিলোমিটার ও প্রস্থ স্থানভেদে সর্বোচ্চ ২৪০ কিলোমিটার থেকে সর্বনিম্ন ৩৪ কিলোমিটার।
বিশ্বের অন্যান্য সাগরের তুলনায় আকার-আয়তনে ছোট হলেও যাতায়াতের পথ হিসেবে বেশ বিপজ্জনক ইংলিশ চ্যানেল। ভৌগলিক কারণেই বছরের অধিকাংশ সময়ে ঝড়ো আবহাওয়া থাকে এ সাগরে।
কিন্তু এই সাগর দিয়েই প্রতিবছর ফ্রান্স থেকে বিপুল সংখ্যক অবৈধ অভিবাসী পাড়ি জমান ব্রিটেনে। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত প্রায় ৪০ হাজার অভিবাসী ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে যুক্তরাজ্যে প্রবেশ করেছেন।
ইংলিশ চ্যানেল রুট দিয়ে অভিবাসীদের আগমন ঠেকাতে নভেম্বর ৭ কোটি ২২ লাখ ইউরো মূল্যের একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল ফ্রান্স ও ব্রিটেনের মধ্যে। সেই চুক্তির ভিত্তিতেই বৃহস্পতিবার ব্রাসেলসে যুক্তরাজ্যের সঙ্গে ইউরোপের ‘ক্যালিস গ্রুপের’ ভোট হয়েছে বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন ব্রিটেনের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুয়েল্লা ব্রেভারম্যান।
বিবৃতিতে তিনি আরও বলেন, ‘ইউরোপে অবৈধ অভিবাসীদের জোয়ার ঠেকানো এবং মানবপাচারকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করতে ইউরোপের সব দেশের একসঙ্গে কাজ করা প্রয়োজন।’
‘ক্যালিস গ্রুপের সঙ্গে ব্রিটেনের আজকের বৈঠক বেশ গঠনমূলক হয়েছে। বৈঠকে গৃহীত বিভিন্ন সিদ্ধান্তের বাস্তবায়ন শুরু হলে মানবপাচারের সঙ্গে যুক্ত ঘৃণ্য অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনার পথ অনেক সহজ হবে,’ বিবৃতিতে বলেন ব্রিটেনের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।