পরিবেশ বান্ধব বিনিয়োগে বেসরকারি খাতকে উৎসাহিত করতে বাংলাদেশকে ২৫ কোটি ডলারের ঋণ দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক। আন্তর্জাতিক অর্থলগ্নিকারী প্রতিষ্ঠানটির ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশন কর্মসূচির আওতায় এ ঋণ দেওয়া হচ্ছে। এ অর্থ পরিশোধ করতে বাংলাদেশ পাঁচ বছরের রেয়াতকালসহ ৩০ বছর সময় পাবে।
শুক্রবার (২ডিসেম্বর) বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিস থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিশ্বব্যাংক জানায়, এ ঋণের অর্থে বছরে সাড়ে তিন হাজার মেট্রিক টন ই-বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় সক্ষম একটি বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কেন্দ্র ও সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বে চারটি যানবাহন পরীক্ষা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করা হবে। যার মাধ্যমে নির্দিষ্ট কিছু এলাকা থেকে বছরে গ্রিন হাউজ গ্যাস নির্গমনের পরিমাণ ১০ লাখ মেট্রিক টন কমানো সম্ভব হবে। এছাড়া বছরে ৪ হাজার ৬০০ গাড়ির ফিটনেস ও অন্যান্য বিষয় পরীক্ষা করে দেখা যাবে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ও ভুটানে বিশ্ব ব্যাংকের ভারপ্রাপ্ত কান্ট্রি ডিরেক্টর ডানডান চেন বলেন, পরিবেশগত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার ক্ষেত্রে বিশ্ব ব্যাংক বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের উন্নয়ন সহযোগী। এ তহবিলের অর্থ দিয়ে বাংলাদেশে পরিবেশ সংরক্ষণে কাজ করা প্রতিষ্ঠানগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি আরও কার্যকরভাবে দূষণ নিয়ন্ত্রণ এবং টেকসই উন্নয়ন এগিয়ে নিতে সহযোগিতা পাবে।
দ্রুত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং নগরায়ণের জন্য বাংলাদেশকে দূষণ আর পরিবেশগতভাবে চড়া মূল্য দিতে হচ্ছে। দূষণ কেবল স্বাস্থ্য সমস্যাই বাড়াচ্ছে না, অর্থনৈতিকভাবে দেশের প্রতিযোগিতা সক্ষমতাও কমিয়ে দিচ্ছে, বলেন বিশ্বব্যাংকের এ কমকর্তা। ঢাকা উচ্চ পর্যায়ের বায়ু ও পানি দূষণের শিকার। ফিটনেসবিহীন গাড়ির চলাচল, ধুলা-বালি ও আশপাশের নদীকে অতিমাত্রায় ব্যবহারের কারণে পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। যা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পথেও প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে দেওয়া হচ্ছে এ ঋণ।
এ বিষয়ে এই প্রকল্পের নেতৃত্বদানকারী ও বিশ্ব ব্যাংকের জ্যেষ্ঠ পরিবেশ বিশেষজ্ঞ জিয়াং রু বলেন, ঢাকায় উচ্চ মাত্রায় বায়ু দূষণের কথা আমরা প্রায়ই খবরে দেখি। বিশ্ব ব্যাংক দেখেছে ২০১৯ সালে বাংলাদেশে যত মৃত্যু হয়েছে, তার ২০ শতাংশের পেছনে ছিল বায়ু দূষণ ও সিসা দূষণ। আর এ দূষণের কারণে বাংলাদেশের জিডিপির ১২ শতাংশ নষ্ট হচ্ছে।
এ প্রকল্পের আওতায় ঢাকার বিভিন্ন নদীর ২২টি পয়েন্টে প্রথমবারের মতো সার্বক্ষণিক পানির মান পরীক্ষার স্টেশনের একটি নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা হবে। এছাড়া নিয়ম মাফিক বর্জ্য পরিশোধন হচ্ছে কি না, সে নজরদারির জন্য বিভিন্ন শিল্প এলাকায় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র গড়ে তোলা হবে। বিশ্ব ব্যাংকের এ ঋণের অর্থে সফলভাবে প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে পারলে দূষণ কমবে এবং ঢাকা ও আশপাশের এলাকার ২ কোটি ১০ লাখের মানুষ উপকৃত হবে।