যশোরের মনিরামপুর উপজেলায় সাতক্ষীরাগামী কাভার্ডভ্যানের চাপায় বাবা-ছেলেসহ পাঁচজন নিহত হয়েছে। শুক্রবার (২ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলার যশোর-মণিরামপুর সড়কের বেগারীতলায় এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
মনিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মো. মনিরুজ্জামান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি কাভার্ডভ্যান দোকানে ঢুকে পড়ায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। কাভার্ড ভ্যানটি রাস্তা ছেড়ে অন্তত ১০টি দোকানে আঘাত করেছে। পাঁচজন ঘটনাস্থলেই নিহত হয়েছেন।
এদিকে ঘটনার পরপরই কাভার্ডভ্যান ফেলে পালিয়ে গেছেন চালক ও চালকের সহকারী।
ক্ষতিগ্রস্ত হোটেল মালিক আবু তালেবসহ স্থানীয়রা বলেন, হাবিবুরের বাড়ি বাজারের পিছনে। সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ছেলেকে নিয়ে বাড়ি থেকে রাস্তায় ওঠেন হাবিবুর। কাভার্ডভ্যানটি এসে প্রথমে তাঁদের দুজনকে চাপা দেয়। এরপর কাভার্ডভ্যানটি রাস্তার পাশের কয়েকটি দোকান ভেঙে নুরুল আমিনের চা দোকানে বসে থাকা লোকজনকে চাপা দিয়ে হোটেলে এসে ধাক্কা দিয়ে আটকে যায়। এরপর সবাই দৌড়ে এসে কাভার্ডভ্যানের নিচ থেকে সামছুর, তৌহিদুল ও জিয়াউরের মরদেহ টেনে বের করে।
স্থানীয় বাসিন্দা ইদ্রিস আলী জানান, শুক্রবার সকাল ৮টার দিকে যশোর থেকে সাতক্ষীরাগামী একটি কাভার্ড ভ্যান বেগারীতলায় এলাকায় পৌঁছালে চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন। এ সময় কাভার্ড ভ্যানটি রাস্তার পাশে হোটেল, চায়ের দোকানসহ অন্তত ১০টি দোকানে আঘাত করে। এতে চায়ের দোকানে ও হোটেলে নাস্তা করতে আসা এবং পথচারী মিলে পাঁচজনের মৃত্যু হয়। নিহতদের মধ্যে বাবা-ছেলেও রয়েছেন।
এরা হলেন—মনিরামপুরের বেগারীতলার হাবিবুর রহমান (৪৫) ও তার ছেলে তাওশিদ হোসেন (৭)। এছাড়া, জয়পুর গ্রামের জিয়ারুল (৩৫), ব্যাগারিতলা গ্রামের তৌহিদুর রহমান (৩৮) ও মীর শামসুল (৬০) এ দুর্ঘটনায় নিহত হন।
প্রত্যক্ষদর্শী শাহিদুল ইসলাম বলেন, নিহতদের মধ্যে সামছুর, তৌহিদুল ও জিয়াউর নাস্তা সেরে চা পানের জন্য নুরুল আমিনের দোকানের খাটের ওপর বসে ছিল। এসময় কাভার্ডভ্যান এসে তাঁদের চাপা দিয়ে ঠেলে নিয়ে এসে হোটেলে ধাক্কা দেয়। গাড়ির চালক ও সহকারী পালিয়ে গেছে। এ দৃশ্য দেখা যায় না। আমরা মরদেহ ধরতে যেয়ে চালকের খবর নিতে পারিনি।
ভোজগাতী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক বলেন, কাভার্ডভ্যানটা ৫ জনের জীবন কেড়ে নিয়েছে। ভ্যানের ধাক্কায় ৬ থেকে ৮টা দোকান ভেঙে অন্তত ২০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। আমরা চালকের উপযুক্ত শাস্তি চাই।