আওয়ামী লীগের অন্যতম সহযোগী সংগঠন মহিলা আওয়ামী লীগ বিভিন্ন আলোচনা-সমালোচনার মধ্য দিয়ে দীর্ঘ ৫৩ বছর পার করেছে। আগামীকাল শনিবার (২৬ নভেম্বর) রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহিলা আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উদ্বোধনী অধিবেশন শেষে কাউন্সিল অধিবেশনে সংগঠনের শীর্ষ দুই নেত্রী নির্বাচন করা হবে। কাউন্সিলররা নেতৃত্ব নির্বাচনের ক্ষমতা আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার ওপর অর্পণ করবেন। নতুন নেতৃত্বের সন্ধান করছেন আওয়ামী লীগের হাইকমান্ড।
একই সঙ্গে আগামীকাল ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের কমিটিও ঘোষণা করা হতে পারে। মহিলা আওয়ামী লীগ ১৯৬৯ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি প্রতিষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশের রাজনীতির ক্ষেত্রে মহিলাদের সবচেয়ে বড় সংগঠন মহিলা আওয়ামী লীগ। এই সংগঠনে এবার যারা নেতৃত্বে আসবেন, তাদের আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকালীন পরিস্থিতি সামলাতে হবে। নিজেদের যোগ্য প্রমাণে মরিয়া মহিলা নেত্রীরা। আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতাদের বাসা-অফিসে প্রতিনিয়ত হাজিরা দিচ্ছেন পদপ্রত্যার্শীরা।
সর্বশেষ ২০১৭ সালের ৪ মার্চ সম্মেলনের মাধ্যমে মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন সাফিয়া খাতুন, সাধারণ সম্পাদক হন মাহমুদা বেগম। কমিটির মেয়াদ ২০২০ সালে শেষ হলেও করোনো মহামারির কারণে নির্ধারিত সময়ে সম্মেলন হয়নি। সংগঠনের সব সাংগঠনিক জেলা, ওয়ার্ড ও ইউনিটে পূর্ণাঙ্গ কমিটি করতে পারেননি তারা। এমনকি ৭৪টি সাংগঠনিক জেলার মধ্যে অর্ধেক জেলায় সম্মেলন ও কমিটি করতে ব্যর্থ হয়েছেন তারা। এ নিয়ে নেতাকর্মীরা ক্ষুব্ধ। মহিলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা জানান, গত জুলাই মাসে কিছুসংখ্যক কমিটি ঘোষণা করে নানা বিতর্কের জন্ম দিয়েছিল সংগঠনটি। এছাড়া সারা দেশে কমিটি বাণিজ্য ও বিতর্কিত ব্যক্তিদের সংগঠনে জায়গা করে দেওয়ায় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে এখন অভিযোগের পাহাড়। তাই নেতাকর্মীরা মহিলা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের পরিবর্তন চান।
গত ১৫ নভেম্বর মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক গণভবনে আওয়ামী লীগের সভানেত্রীর সঙ্গে দেখা করেছেন। এবারের সম্মেলন সফল করতে সাতটি উপ-কমিটি গঠন করা হয়। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রস্তুত করা হচ্ছে মঞ্চ। সংগঠনের বর্তমান সভাপতি সাফিয়া খাতুন সম্মেলনে সভাপতিত্ব করবেন। মহিলা আওয়ামী লীগের নেত্রীরা বলেন, ‘আমাদের আগামীর নেতৃত্ব নির্ভর করছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তের ওপর। তিনি যাকে নেতৃত্ব দেবেন, তিনিই পাবেন।
মহিলা আওয়ামী লীগের কমিটি ১৫১ সদস্যবিশিষ্ট। এর মধ্যে বেশ কয়েক জন সদস্য মারা গেছেন। এছাড়া কেউ সংসদ সদস্য, আবার কেউ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে পদ পাওয়ায় মহিলা আওয়ামী লীগের সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ত নেই। বর্তমান কমিটির মধ্যে অনেকেই বার্ধক্যজনিত কারণে অসুস্থ থাকায় সংগঠন থেকে বাদ পড়তে পারেন বলে জানা গেছে। তাই এবার মহিলা আওয়ামী লীগে যোগদানে যুব মহিলা লীগ ও সাবেক ছাত্রলীগের নেত্রীদের ভাগ্য খুলতে পারে। বর্তমান কমিটির মধ্যে থেকে সভাপতি পদে বর্তমান সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সাফিয়া খাতুন, সাধারণ সম্পাদক মাহমুদা বেগম, সহসভাপতি আসমা জেরিন ঝুমুসহ প্রায় ১০ জন আছেন আলোচনায়। এছাড়া বর্তমান যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক শিরিন রুকসানা, মীনা মালেক, জান্নাত আরা হেনরী, সাংগঠনিক সম্পাদক আনারকলি পুতুল, সুলতানা রাজিয়া পান্নাসহ ১৫ জন নেতা শীর্ষ দুই পদের একটিতে আসতে চান।
এছাড়া বর্তমান কমিটির সম্পাদকমণ্ডলীর একজন আছেন, যিনি অল্প সময়ের মধ্যে বিপুল অর্থ-সম্পদের মালিক বনে গেছেন। তিনি সংগঠনের পদ-পদবি ব্যবহার করে সারাক্ষণ সচিবালয়ে তদবিরে ব্যস্ত থাকেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এবার তার টার্গেট সভাপতি হওয়া। এছাড়া আরও কয়েকজন নেতা সংগঠনকে ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠা