সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলায় আওয়ামী লীগের সঙ্গে বিএনপি নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ইট-পাটকেল নিক্ষেপ ও গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে ছয় পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় কয়েকটি ককটেল উদ্ধার করা হয়েছে।
শুক্রবার (১৮ নভেম্বর) দুপুরে উপজেলার জামতৈল রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য রুমানা মাহমুদসহ বিএনপি ও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরাও আহত হয়েছেন।
পুলিশ জানিয়েছে, সিরাজগঞ্জের সহকারী পুলিশ সুপার (কামারখন্দ সার্কেল) আদনান মুস্তাফিজ ও কামারখন্দ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরন্নবী প্রধানসহ তাদের ছয় সদস্য আহত হয়েছেন।
সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান বাচ্চু বলেন, আগামী ৩ ডিসেম্বর রাজশাহীর বিভাগীয় গণসমাবেশ সফল করতে কামারখন্দে দলীয় কার্যালয়ে আমরা আলোচনা সভা করি। সেখানে কেন্দ্রীয় নেত্রী সৈয়দা আসিফা আশরাফি পাপিয়া, জেলা বিএনপির সভানেত্রী রুমানা মাহমুদসহ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সভা শেষে দলীয় কার্যালয় থেকে বের হয়ে আমরা রেলওয়ে স্টেশনে এলে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এ সময় তারা সাবেক এমপি ও জেলা বিএনপির সভাপতি রুমানা মাহমুদের গাড়ি ও বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে। আমরা প্রতিরোধ করতে গেলে পুলিশ আমাদের ওপর ছররা গুলি চালায়। এতে রুমানা মাহমুদ ও আমিসহ অন্তত ১০ জন নেতা-কর্মী আহত হই।
কামারখন্দ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন শেখ বলেন, বিএনপির অভিযোগ সঠিক নয়। বরং তাদের মধ্যেই গ্রুপিং রয়েছে। দুই গ্রুপে দ্বন্দ্বের একপর্যায়ে স্টেশন এলাকায় আওয়ামী লীগের ৬-৭ জন নেতা-কর্মীর ওপর তারা হামলা চালিয়ে আহত করে।
কামারখন্দ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরনবী প্রধান বলেন, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনার সময় পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে যায়। এ সময় বিএনপির নেতা-কর্মীরা হামলা চালায়। বাধ্য হয়ে ছররা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা হয়। এ ঘটনায় তিনি নিজেও আহত হয়েছেন বলে জানান।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (কামারখন্দ সার্কেল) আদনান মুস্তাফিজ বলেন, বিএনপি নেতা-কর্মীরা প্রোগ্রাম শেষ করে জামতৈল স্টেশন এলাকায় দোকানপাট ও মোটরসাইকেল ভাঙচুর শুরু করে। বাধা দিতে গেলে তারা পুলিশের ওপর ইট-পাটকেল নিক্ষেপ ও লাঠিসোটা নিয়ে হামলা করে। তাদের হাতে ধারালো অস্ত্রও ছিল। তাদের হামলায় আমি ও থানার ওসিসহ ছয় পুলিশ সদস্য আহত হই। পরিস্থিতি বর্তমানে নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এ ঘটনায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।