রাশিয়ার বিরুদ্ধে একটি খসড়া প্রস্তাব পাশ করেছে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ। সোমবার পাশ হওয়া এই প্রস্তাবে ইউক্রেনে আগ্রাসনের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের জন্য রাশিয়াকে জবাবদিহি করার আহ্বান জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে যুদ্ধের ফলে হওয়া ক্ষয়ক্ষতির জন্য কিয়েভকে ক্ষতিপূরণ দিতে মস্কোকে বাধ্য করার কথাও বলা হয়েছে। এদিকে রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনার জন্য তুরস্ক গেছেন সিআইএ প্রধান উইলিয়াম বার্নস।
মঙ্গলবার সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইউক্রেনের পক্ষ থেকে ১৯৩ সদস্যের জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে খসড়া প্রস্তাবটি তোলা হয়। সোমবার এর ওপর ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রস্তাবের পক্ষে ৯৪টি ভোট পড়ে। বিপক্ষে পড়ে ১৪টি ভোট। বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানসহ ৭৩টি দেশ ভোটদানে বিরত ছিল। নেপাল, ভুটান, শ্রীলঙ্কা, ইন্দোনেশিয়া, মিসর, ইসরাইল, ব্রাজিল ও দক্ষিণ আফ্রিকার মতো দেশগুলোও ভোটদান থেকে বিরত ছিল। রাশিয়া এবং দেশটির মিত্র বেলারুশ, চীন, কিউবা, উত্তর কোরিয়া, ইরান ও সিরিয়া প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দেয়। এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা (সিআইএ)-এর প্রধান উইলিয়াম বার্নস তুরস্ক সফরে গেছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। সূত্র বলছে, রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনার জন্যই তার এই সফর।
হোয়াইট হাউজের একজন কর্মকর্তার বরাত দিয়ে বেশকিছু প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিজের রুশ সমকক্ষের সঙ্গে বৈঠক এবং ইউক্রেনে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের পরিণতি সম্পর্কে মস্কোকে সতর্ক করতেই এই সফরে গেছেন সিআইএ পরিচালক। এক সময় রাশিয়ায় মার্কিন রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন সিআইএর বর্তমান প্রধান উইলিয়াম বার্নস। বার্নসের তুরস্ক সফরের বিষয়টি নিশ্চিত করে হোয়াইট হাউজের একজন কর্মকর্তা জানান, এ বিষয়ে ওয়াশিংটনের তরফে ইউক্রেনকে আগাম অবহিত করা হয়েছিল। তবে রাশিয়ার বৈদেশিক গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান সের্গেই নারিশকিনের সঙ্গে উইলিয়াম বার্নসের আলোচনার বিষয়ে অবশ্য বিস্তারিত জানা যায়নি। তাদের আলোচনা ইতিমধ্যেই শেষ হয়েছে কি না, সেটিও স্পষ্ট নয়। আনাদোলু এজেন্সির খবরে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গোয়েন্দা সূত্রের বরাত দিয়ে তুরস্কের গোয়েন্দা কর্মকর্তারা তত্ত্বাবধানে দুই গোয়েন্দা প্রধানের বৈঠক আয়োজনের কথা জানানো হয়েছে।
খাদ্যশস্য রপ্তানিতে গঠনমূলক আলোচনার কথা জানাল রাশিয়া
এদিকে ইউক্রেনের খাদ্যশস্য রপ্তানির ব্যাপারে জাতিসংঘের সঙ্গে ‘গঠনমূলক’ আলোচনার কথা জানিয়েছে রাশিয়া। রুশ প্রেসিডেন্টের দপ্তর ক্রেমলিনের তরফে এমন তথ্য দেওয়া হয়েছে। ক্রেমলিন জানিয়েছে, কৃষ্ণ সাগরের শস্য রপ্তানি চুক্তি পুনরায় নবায়নের ব্যাপারে কাজ চলছে এবং গত সপ্তাহে এ ব্যাপারে জাতিসংঘের সঙ্গে হওয়া আলোচনা ‘মোটামুটিভাবে গঠনমূলক’ ছিল। এর আগে শুক্রবার জেনেভায় রাশিয়ার একটি প্রতিনিধি দলের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করেন জাতিসংঘের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। কৃষ্ণ সাগর উপকূলের বন্দর ব্যবহার করে ইউক্রেনের খাদ্যশস্য রপ্তানির ব্যাপারে আলোচনার জন্য বৈঠকে মিলিত হন তারা। জাতিসংঘ এবং পশ্চিমা দেশগুলো চাইছে, ইউক্রেনের বিদ্যমান সংঘাত সত্ত্বেও দেশটির বন্দরগুলো থেকে খাদ্যশস্য রপ্তানির বিষয়টি যেন অব্যাহত থাকে।