পুরো নাম ফরিদা আক্তার পপি হলেও চলচ্চিত্রে অভিনয়ের কারণে সবাই তাকে ববিতা নামেই চেনেন। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন এই অভিনেত্রী কানাডায় আছেন দীর্ঘদিন হলো। জানা যায়, সময় পেলেই তিনি সে দেশে থাকা তার একমাত্র পুত্র অনিকের কাছে ছুটে যান। অনিক সেখানে পড়াশোনা ও জব করছেন। অনিককে রেঁধে খাওয়ানো এবং তাকে সঙ্গে নিয়ে বেড়াতেও যান তিনি। আর যখন অনিক কাজে চলে যান তখন একাকী সময় কাটাতে ববিতা বের হয়ে পড়েন মাছ শিকার ও শপিংয়ে।
কয়েকদিন আগে ববিতা গেলেন সেখানকার এক কাঁচাবাজারে। কিনলেন ক্যাপসিকামসহ কিছু সবজি। এমন একটি দৃশ্য ক্যামেরায় বন্দি হলো চোখের পলকে। সেই ছবি সামাজিকমাধ্যম ফেসবুকে শেয়ার করেছেন ববিতা। সেখানে সবজির দোকানের সামনে ক্যাপসিকাম ও কাঁচা মরিচ হাতে দেখা গেছে তাকে। ছবির ক্যাপশনে এই কিংবদন্তি অভিনেত্রী লেখেন, কানাডার বাজারে…।
কিংবদন্তি নির্মাতা জহির রায়হানের ‘সংসার’ সিনেমায় শিশুশিল্পী হিসাবে ১৯৬৮ সালে অভিষেক হয় ববিতার। এখানে তিনি রাজ্জাক-সুচন্দার মেয়ের চরিত্রে অভিনয় করেন। পরে ফরিদা আক্তার পপি থেকে ‘ববিতা’ হয় ওঠেন জহির রায়হানের উর্দু সিনেমা ‘জ্বলতে সুরুজ কি নিচে’র মাধ্যমে।
নায়িকা হিসাবে ববিতার প্রথম সিনেমা ‘শেষ পর্যন্ত’ মুক্তি পায় ১৯৬৯ সালের ১৪ আগস্ট, যেদিন ববিতার মা মারা যান। এতে তার নায়ক ছিলেন রাজ্জাক। আলোচিত সিনেমা ‘টাকা আনা পাই’ ববিতাকে চলচ্চিত্রের শক্ত আসন দিলেও তার জীবনের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য সিনেমা বলা হয় সত্যজিৎ রায়ের ‘অশনি সংকেত’কে। এ সিনেমায় অভিনয় করে ববিতা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দারুণ প্রশংসা অর্জন করেন।
দীর্ঘ ক্যারিয়ারে ২৫০টির বেশি সিনেমায় অভিনয় করেন এ অভিনেত্রী। স্বীকৃতিস্বরূপ একাধিকবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারসহ দেশি-বিদেশি অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননা পেয়েছেন তিনি। ববিতা অভিনীত উল্লেখযোগ্য সিনেমার তালিকায় রয়েছে-‘অশনি সংকেত’, ‘নিশান’, ‘মন্টু আমার নাম’, ‘প্রতিজ্ঞা’, ‘লাভ ইন সিঙ্গাপুর’, ‘মায়ের জন্য পাগল’, ‘টাকা আনা পাই’, ‘স্বরলিপি’, ‘তিনকন্যা’, ‘শ্বশুরবাড়ি’, ‘মিস লঙ্কা’, ‘জীবন সংসার’, ‘লাইলি মজনু’, ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’, ‘লাঠিয়াল’, ‘জন্ম থেকে জ্বলছি, ইত্যাদি।