রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়ায় পদ্মা নদীর ক্যানাল ঘাটে রোববার সকাল থেকে ভাসছিল অজ্ঞাত একটি লাশ। খবর পেয়ে বেলা ১১টার দিকে দৌলতদিয়া নৌ-ফাঁড়ি পুলিশের ওসি সিরাজুল কবির ও গোয়ালন্দ ঘাট থানার এসআই মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে পুলিশের পৃথক দুটি দল সেখানে হাজির হয়।
প্রায় এক ঘণ্টা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলা শেষে তারা লাশটি পানি থেকে উপরে তোলার উদ্যোগ নেন। এ পর্যায়ে দুই কর্মকর্তা তার সহকর্মী ও স্থানীয় লোকদের সহযোগিতায় এগিয়ে আসার আহবান জানান। কিন্তু অধিকাংশের মধ্যে পাশ কাটিয়ে যাবার একটা প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়।
একপর্যায়ে নৌ-ফাঁড়ির ওসি সিরাজুল কবির নিজেই রশি নিয়ে হাঁটু পানিতে নেমে পড়েন। তিনি লাশটি উপরে তোলার জন্য নিজেই লাশটির পা রশি দিয়ে বাঁধতে শুরু করেন। এ পর্যায়ে ২-৩ জন কনস্টেবল এগিয়ে গিয়ে ওসির কাজে সহযোগিতা শুরু করেন। তারা লাশের মাথার দিকটায় রশি দিয়ে বেঁধে উপরে তুলতে চেষ্টা করেন।
কিন্তু লাশটি বেশ ভারি হওয়ায় তারা পারছিলেন না। এ পর্যায়ে স্থানীয় কয়েকজন যুবক এগিয়ে গিয়ে পুলিশকে সহযোগিতা করেন। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় নদীর খাড়া পাড় ডিঙিয়ে লাশটি উপরে তোলা সম্ভব হয়। ঘটনাস্থলে উপস্থিত যুগান্তর প্রতিনিধিসহ স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মী ও শত শত স্থানীয় মানুষ পুলিশ-জনতার এ যৌথ প্রচেষ্টা লক্ষ্য করেন। তারা শুরুতেই ওসির এগিয়ে যাওয়াকে সাধুবাদ জানান।
গোয়ালন্দ প্রেস ক্লাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি আবুল হোসেন মোল্লা বলেন, ওসি সাহেব একজন বয়স্ক মানুষ। তিনি জোরালোভাবে নির্দেশ দিলে কনস্টেবলরা শুরুতেই নেমে লাশ তোলার কাজ শুরু করতেন। কিন্তু তিনি তা না করে একটা বিকৃত, উলঙ্গ ও ফুলে যাওয়া লাশ উপরে তুলতে নিজ হাতে যেভাবে কাজ শুরু করেন তা সত্যিই প্রশংসার দাবিদার। এ বিষয়ে দৌলতদিয়া নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ওসি সিরাজুল কবির বলেন, এটা আমার ডিউটি। আমি এগিয়ে গিয়েছি পরে আমার সহকর্মী ও স্থানীয় কিছু যুবক এগিয়ে এসেছেন। আমি সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।