করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় ফিলিপাইনের লুজন দ্বীপের কাভিতে লকডাউন জারি করেছে প্রাদেশিক সরকার কর্তৃপক্ষ। এ জন্য সন্ধ্যা ৬টার পর লোকজনকে বাড়িতে থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এদিকে, লকডাউন না মানায় ফিলিপাইনে ড্যারেন মানাওগ পেনারেদন্দো নামে এক যুবককে ৩০০ বার উঠবস করিয়ে শাস্তি দিয়েছে দেশটির পুলিশ। এরই জের ধরে পরদিন ২৮ বছর বয়সী সেই যুবকের মৃত্যু হয়।
কাভি প্রদেশের ট্রিয়াস শহরের এ ঘটনা আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবর উঠে এসেছে। ড্যারেনের মৃত্যুর ঘটনাকে ‘হৃদয়বিদারক’ বলে উল্লেখ করেছেন ট্রিয়াস শহরের পুলিশ প্রধান মার্লো সোলেরো। আদ্রিয়ান লুসেনা নামে তার এক আত্মীয় ড্যারেনের মৃত্যুর সংবাদ জানিয়ে তার ফেসবুকে পোস্ট দিলে বিষয়টি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবরে উঠে আসে। স্থানীয় পত্রিকাগুলোকে ড্যারেনের স্ত্রী রেইশেলিন বেলসে জানান, শুক্রবার পুরো দিন ড্যারেন ঠিক মতো দাঁড়াতে পারেনি প্রায় হামাগুড়ি দিয়ে চলাফেরা করেছে। আমি একবার তাকে ডাক্তারের কাছে যাওয়ার জন্য বলেছিলাম, কিন্তু সে বললো সামান্য শরীর ব্যাথা, এমনিতেই সেরে যাবে। তারপর আমিও আর কোনো কথা বলিনি।
জানা যায়, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬ টার পরপর তিনি বাসা থেকে বের হন পানি আনার জন্য। এসময় বাহির হবার পর পুলিশ তাকে ধরে। ড্যারেন একাধিকবার পুলিশকে বাড়ির বাইরে বের হবার কারণ জানানো সত্ত্বেও পুলিশ তাতে কোনো কর্ণপাত না দিয়েই তাকে শাস্তি হিসেবে ১০০ বার ওঠবস করার আদেশ দেয়। তবে একেবারে ১০০ বার ওঠবস করতে না পারায় আবার তাকে ১০০ বার ওঠবস করতে বলা হয়। এমন করে সর্বমোট ৩০০ বার ওঠবস করানো হয় ড্যারেনকে। ৩০০ বার ওঠবস করার পর ভোর ৬টায় বাসায় ফিরলে তখন দাঁড়িয়ে থাকার মতো অবস্থা ছিল না তার।
ট্রিয়াস শহরের পুলিশ প্রধান মার্লো সোলেরো বলেন, লকডাউন চলাকালীন সময় জনগণকে ঘরে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে কেউ যদি সেই নির্দেশ না মানে, সেইক্ষেত্রে তাকে শাস্তি দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়নি। এসব ক্ষেত্রে যেন সহযোগিতাপূর্ণ আচরণ করা হয় এবং মানুষকে বুঝিয়ে বাড়ি পাঠানো হয় এমনটা নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, কাউকে শারীরিক শাস্তি দেওয়া হয়েছে-এমন অভিযোগ কোনো কর্মকর্তার বিরুদ্ধে পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।