করোনার প্রভাব মোকাবিলায় বিশ্বব্যাংকের কাছে আরো ৫০ কোটি ডলার বাজেট সহায়তা চাইলেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। দেশীয় মুদ্রায় এর পরিমাণ প্রায় ৪ হাজার ২৫০ কোটি টাকা। বিশ্বব্যাংক-আইএমএফ এর চলমান বসন্তকালীন সভা ২০২১ এ অংশ নিয়ে অর্থমন্ত্রী এ আহ্বান জানান। অর্থমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল ও বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট হার্টউইগ শেফারের নেতৃত্বে বিশ্বব্যাংকের প্রতিনিধিদলের মধ্যে সোমবার সন্ধ্যায় একটি ভার্চুয়াল সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় অর্থমন্ত্রী উল্লেখ করেন, করোনা মহামারির কারণে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো ক্ষতিগ্রস্ত হলেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিচক্ষণ দূরদৃষ্টিসম্পন্ন নেতৃত্বে বাংলাদেশের অর্থনীতি এখন কমবেশি ভালো অবস্থানে রয়েছে।
এই সংকটময় পরিস্থিতির ভয়াবহতা প্রধানমন্ত্রী শুরুতেই অনুধাবন করতে পেরে দেশের সবধরনের অর্থনৈতিক স্তরের মানুষের জন্য এ পর্যন্ত ১ লাখ ২৪ হাজার ৫৩ কোটি টাকার মোট ২৩টি প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণার ব্যবস্থা করেছেন। ইতিহাসে যা একটি বিরল সাহসী পদক্ষেপ। বাংলাদেশের সব নাগরিকের জন্য বিনা মূল্যে কোভিড-১৯ এ টিকা প্রদানের কার্যক্রম শুরুর বিষয়টিও উল্লেখ করেন তিনি। কর্মক্ষেত্রে নারীদের অংশগ্রহণ আরো বেশি হারে বাড়ানোর লক্ষ্যে ছাত্রীদের জন্য প্রযুক্তিগত ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা প্রকল্পে এবং করোনার প্রভাব মোকাবিলায় বাজেট সাপোর্ট হিসেবে ৫০ কোটি ডলার সহযোগিতার জন্য আহ্বান জানান অর্থমন্ত্রী।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, সভায় বাংলাদেশের সামগ্রিক উন্নয়নে বিশ্বব্যাংকের অব্যাহত সহযোগিতার জন্য কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন অর্থমন্ত্রী। সেই সঙ্গে চলমান করোনা মহামারিজনিত কারণে দেশের ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমবাজার, আর্থিক ও সামাজিক খাত সচল রাখার লক্ষ্যে বিশ্বব্যাংকের প্রোগ্রামেটিক জবস ডেভেলপমেন্ট পলিসি ক্রেডিট (ডিপিসি) প্রকল্পের আওতায় ঋণ সহায়তা এবং করোনার ভ্যাকসিনের জন্য ৫০ কোটি ডলার অর্থায়নের জন্যও তিনি বিশ্বব্যাংকের প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের সদস্য হিসেবে অর্থমন্ত্রী, অর্থসচিব ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব আলোচনায় অংশ নেন। অন্যদিকে, বিশ্বব্যাংকের পক্ষে হার্টউইগ শেফার ও কান্ট্রি ডিরেক্টর মার্সি মিয়ং টিমবন আলোচনায় অংশ নেন। সভায় পরিবেশগত উন্নয়ন ও সুরক্ষা নিশ্চিতকরণের জন্য প্রস্তাবিত ‘ইকোলজিক্যাল রেস্টোরেশন সাপোর্ট টু রিভার অ্যান্ড ক্যানেল এরাউন্ড ঢাকা’ শীর্ষক প্রকল্পে পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন, পরিবহন, নদীকেন্দ্রিক পর্যটনের উন্নয়নে টেকসই পরিবেশবান্ধব অবকাঠামো তৈরিসহ এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠায় সহযোগিতার জন্য বিশ্বব্যাংককে অর্থমন্ত্রী অনুরোধ জানান।