যুক্তরাষ্ট্রে মধ্যবর্তী নির্বাচনকে সামনে রেখে শুরু হয়েছে আগাম ভোট। এরই মধ্যে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ভোট দিয়েছেন। দেশজুড়েই চলছে ডেমোক্রেটিক ও রিপাবলিকান দলের জোর প্রচারণা। কারণ এই নির্বাচনের মাধ্যমেই কংগ্রেসে দুই দলের ভাগ্য নির্ধারণ হবে। তবে সব কিছু ছাপিয়ে এখন আলোচনায় এসেছে নির্বাচনের ব্যয় নিয়ে। কারণ খরচের দিক দিয়ে এই বছর অতীতের রেকর্ড ভাঙতে যাচ্ছে। গবেষণা সংস্থা অ্যাড ইমপ্যাক্ট পূর্বাভাসে জানিয়েছে, ২০২২ সালের মধ্যবর্তী নির্বাচনে ৯ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার খরচ হবে, যা ২০১৮ সালের চেয়ে ১৪৪ শতাংশ বেশি।
ওয়েসলিয়ান মিডিয়া প্রকল্পের একজন অধ্যাপক ও পরিচালক এরিকা ফ্র্যাঙ্কলিন ফাউলার বলেন, প্রশ্ন হলো কেন এ বছর নির্বাচনী খরচ বেড়ে যাচ্ছে। ৮ নভেম্বরের মধ্যবর্তী নির্বাচনে রিপাবলিক ও ডেমোক্রেটিক উভয় পার্টিই কংগ্রেসের নিয়ন্ত্রণ নিতে চাচ্ছে। কারণ প্রত্যেক প্রতিযোগিতাই গুরুত্বপূর্ণ। তাছাড়া এই নির্বাচনের ফলাফলেরভিত্তিতে ওয়াশিংটন ডিসি নিয়ন্ত্রিত হবে।
অ্যাড ইমপ্যাক্টের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮ সালের তুলনায় এই বছর সিনেটে ১৩৬ শতাংশ ও হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভের জন্য ৬০ শতাংশ বেশি খরচ হবে।
গ্রুপএম নামের একটি বিজ্ঞাপনী সংস্থা মনে করে, এই বছর আমেরিকান মিডিয়া কোম্পানিগুলোর আয়ের প্রায় চার শতাংশ আসবে রাজনৈতিক বিজ্ঞাপন থেকে।
যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে প্রার্থীদের অধিকাংশ ব্যয় বহন করে মূলত দাতারা। করোনা মহামারিতে অনেক দাতারই অর্থ বেড়েছে। কারণ সে সময় শেয়ারবাজারের অবস্থা ভালো ছিল। চলতি বছরের জুলাইয়ের শেষ পর্যন্ত দাতারা ৬৭৫ মিলিয়ন ডলার অনুদান দেয়, যার মধ্যে ৩৬০ মিলিয়ন ডলার যায় রিপাবলিকানদের কাছে ও ৩০০ মিলিয়ন যায় ডেমোক্রেটদের হাতে। যা দেশটির মোট ফেডারেল রাজনৈতিক ব্যয়ের ১০ শতাংশ।
সাম্প্রতিক বছরগুলোর রাজনৈতিক বিজ্ঞাপনের দিকে নজর দিলে বোঝা যায় যুক্তরাষ্ট্রের গণমাধ্যমের কতটা পরিবর্তন এসেছে। ২০১২ সালের নির্বাচনকে অনেকে সামাজিকমাধ্যম কেন্দ্রিক নির্বাচন বলে থাকে। কারণ সে সময় প্রার্থীরা ভোটারদের কাছে পৌঁছানোর জন্য সামাজিক মাধ্যমকে ব্যবহার করে।
এদিকে ২০২২ সালের নির্বাচন হতে যাচ্ছে স্ট্রিম নির্ভর। এতে ইন্টারনেট কেন্দ্রিক বিজ্ঞাপনে খরচ হবে ১ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার, যা ২০১৮ সালের চেয়ে ১০ গুণ বেশি।
যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যবর্তী নির্বাচনগুলোতে প্রেসিডেন্টের দল সাধারণত ভালো করতে পারে না। বেসরকারি সংস্থা ‘দ্য অ্যামেরিকান প্রেসিডেন্সি প্রজেক্ট’-এর তথ্য বলছে, গত ২১টি মধ্যবর্তী নির্বাচনে প্রেসিডেন্টের দল ‘হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস’-এ মাত্র তিনবার আসন বাড়াতে পেরেছে। আর সিনেটে পেরেছে মাত্র পাঁচবার।