দক্ষিণ আফ্রিকার সবচেয়ে বড় ও প্রভাবশালী জাতিগোষ্ঠী জুলুদের নতুন রাজা হিসেবে মিসুজুলু কা জুয়েলিথিনিকে অবশেষে স্বীকৃতি দিলেন দেশটির প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা। জুলু রাজ্যাভিষেকের ধারাবাহিকতায় আনুষ্ঠানিকভাবে দেওয়া হলো এই স্বীকৃতি। এসময় প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা বলেন, ‘আমাদের রাজা’।
নতুন রাজাকে স্বীকৃতি দেওয়ার অনুষ্ঠান এতোদিন আটকে ছিল। অবশেষে আইনি বিরোধের অবসান ঘটলো যা সিংহাসনে মিসুজুলুর উত্তরাধিকার হওয়া আটকে রেখেছিল। নতুন জুলু রাজা তার জাতিকে একত্রিত করার এবং ঐতিহ্য রক্ষা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
শনিবার নতুন রাজার অভিষেক অনুষ্ঠানে সিরিল রামাফোসা বলেন, ‘আমাদের রাজা প্রকৃতপক্ষে আনুষ্ঠানিকভাবে জুলু জাতির রাজা এবং জুলু জাতির একমাত্র রাজা’।
দক্ষিণ আফ্রিকার বৃহত্তম জাতিগোষ্ঠীর প্রধানকে গত আগস্টে মুকুট দেওয়া হয়েছিল কিন্তু সরকারি সংস্থা, একই সঙ্গে সম্পূর্ণরূপে সমর্থন করার জন্য রামাফোসার কাছ থেকে সরকারি স্বীকৃতির প্রয়োজন ছিল।
২০২১ সালের ১২ মার্চ দক্ষিণ আফ্রিকার জুলু সম্প্রদায়ের রাজা ও মিসুজুলু কা জুয়েলিথিনির বাবা গুডউইল জোয়েলিথিনি মারা যান। তিনি ১৯৭১ সালে রাজার স্বীকৃতি পান। এরপর ৪৮ বছর বয়সী মিসুজুলুর রাজা হিসেবে অভিষেক ঘটে।
প্রেসিডেন্ট রামাফোসা আরও বলেন, ‘এই ঐতিহাসিক মুহূর্তটি জীবনে একবারই আসে, আমাদের মধ্যে অনেকেই এই ঐতিহাসিক মুহূর্তটি আর কখনও দেখতে পাবো না’।
রামাফোসা বলেন, তার সরকার গ্রামীণ এলাকাকে সমৃদ্ধির জায়গায় রূপান্তরিত করতে নতুন রাজার সঙ্গে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
যদিও রাজার পদবি নির্বাহী ক্ষমতা প্রদান করে না। তবে রাজারা ১ কোটি ১০ লাখের বেশি জুলু সম্প্রদায়ের ওপর দুর্দান্ত নৈতিক প্রভাব রাখেন। যারা দক্ষিণ আফ্রিকার ৬ কোটি জনসংখ্যার প্রায় পঞ্চমাংশ।
জুলু রাজপরিবারের মধ্যে বিভিন্ন উপদল বিভিন্নভাবে মামলা দায়ের করে এবং তাদের পছন্দের প্রার্থীদের রাজা বানানোর চেষ্টা করে। সাবেক রাজা জুয়েলিথিনির ৬ স্ত্রী এবং অন্তত ২৮ সন্তান। অর্ধ শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে তিনি রাজত্ব করেছেন।
রাজ পরিবারের প্রত্যেক উপদল তাদের পছন্দের রাজপুত্রকে রাজা বানাতে চাইছিলেন। মিসুজুলু কা জুয়েলিথিনি, সিমাকাদে কা জুয়েলিথিনি এবং বুজাবাজি কা জুয়েলিথিনি, কে রাজা হবেন তা নিয়ে বাঁধে গোলযোগ।
গত মার্চ মাসে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট আনুষ্ঠানিকভাবে মিসুজুলু কা জুয়েলিথিনিকে নতুন জুলু রাজা হিসাবে স্বীকৃতি দেন। কিন্তু মিসুজুলুর নিজের ভাই এমবোনিসি জুলু মামলা করে রাজ্যাভিষেক বন্ধ করতে আদালতের কাছে আবেদন জানান। তবে আদালত তার আবেদনটি খারিজ করে দেন এবং অভিষেক অনুষ্ঠান চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেন।