বাংলাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজে বর্তমানে কয়েক হাজার বিদেশি শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে। আগামীতে বিদেশি শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার অন্যতম গন্তব্য হিসেবে বাংলাদেশকে প্রতিষ্ঠিত করতে নানা উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এর অংশ হিসেবে আগামী সপ্তাহে দুবাইতে একটি শিক্ষা সম্মেলনে যোগ দেবে বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় এবং মেডিকেল কলেজ। সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশগুলো থেকে শিক্ষার্থীদের আকৃষ্ট করার লক্ষ্যে শিক্ষা সম্মেলনে অংশ নিচ্ছে বাংলাদেশ।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, আগামী ৪ নভেম্বর দুবাইতে অনুষ্ঠেয় তিন দিনব্যাপী বাংলাদেশ এডুকেশন ফোরাম সম্মেলনে মূল বক্তব্য রাখবেন শিক্ষামন্ত্রী ড. দীপু মনি ও শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী। প্যান এশিয়ান এক্সিবিউশন এলএলসি এ সম্মেলনের আয়োজন করছে।
এ বিষয়ে শিক্ষা উপমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে হাজার হাজার বিদেশি শিক্ষার্থী বাংলাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় এবং মেডিকেল কলেজে পড়াশোনা করছে। এটি দেশে ক্রমবর্ধমান রেমিট্যান্স প্রবাহকে গতিশীল করছে।
জানা যায়, বাংলাদেশ এডুকেশন ফোরাম সম্মেলন আয়োজনে শিক্ষা মন্ত্রণালয়, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন, আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি-বাংলাদেশ (এআইইউবি) এবং অ্যাসোসিয়েশন অব প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিজ অব বাংলাদেশ সহায়তা দিচ্ছে।
আয়োজকরা একটি গবেষণা প্রতিবেদনের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছেন, ২০২৫ সাল নাগাদ বাংলাদেশি বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল, ডেন্টাল এবং সাধারণ কলেজগুলো ৪৬ লাখ শিক্ষার্থীকে সেবা দেবে। শিক্ষার্থীপ্রতি বছরে গড়ে এক হাজার মার্কিন ডলার খরচ হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এতে করে বাংলাদেশে উচ্চশিক্ষার বাজারের আকার ৪৬০ কোটি মার্কিন ডলারের হবে।
বাংলাদেশে ১৬৩টি বিশ্ববিদ্যালয়, ১১৫টি মেডিকেল কলেজ এবং ২ হাজার ৫০০টিরও বেশি সাধারণ ও বিশেষায়িত কলেজ রয়েছে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম শিক্ষাক্ষেত্র হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে বলে মনে হচ্ছে।
বিবৃতিতে আয়োজকরা জানান, তারা (বিশ্ববিদ্যালয় এবং কলেজ) এখন বিদেশি শিক্ষার্থীদের আকৃষ্ট করতে এবং মধ্যপ্রাচ্যে বসবাসকারী শিক্ষার্থীদের জন্য ভালো মানের সাশ্রয়ী শিক্ষা দিতে প্রস্তুত।
আয়োজকরা বলেন, বাংলাদেশ এডুকেশন ফোরাম-২০২২ বিদেশি শিক্ষার্থীদের বাংলাদেশে উচ্চশিক্ষার প্রসারের জন্য এ ধরনের প্রথম সম্মেলন। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের মালিক, উপাচার্য এবং শিক্ষা পরামর্শদাতা ও শিক্ষাবিদরা যোগ দেবেন।
তারা বলেন, কয়েক বছর আগে পর্যন্ত বাংলাদেশ যুক্তরাজ্য, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, মালয়েশিয়া এবং ভারতে শিক্ষার্থী রপ্তানিকারক ছিল। কিন্তু এখন অত্যন্ত সাশ্রয়ী মূল্যে মানসম্পন্ন শিক্ষার কারণে এটি একটি ছাত্র আমদানিকারক দেশ হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশে অধ্যয়নরত বেশিরভাগ বিদেশি শিক্ষার্থী আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য এবং দক্ষিণ এশিয়ার বেশ কয়েকটি দেশ থেকে আসছে।