জার্মানিতে জ্বালানির দাম অনেক বেড়েছে। মূল্যস্ফীতিও মানুষের বেতন খেয়ে ফেলছে। জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় মহাসংকটে পড়ছে নিম্ন মধ্যবিত্তরা।
ইনস্টিটিউট অফ জার্মান ইকোনমির হিসেবে, ২০১৯ সালে একজন ব্যক্তির আয় কর ও চিকিৎসা বিমার প্রিমিয়াম দেওয়ার পর মাসে ১,৭০০ থেকে ৩,১০০ ইউরো (এক লাখ ৭০ হাজার থেকে তিন লাখ ছয় হাজার টাকা) হলে তাকে মধ্যবিত্ত বলা হতো। আর দুই সন্তানসহ চারজনের পরিবারের মাসিক আয় ৩,৫৪০ থেকে ৬,৬৪০ ইউরো (সাড়ে তিন লাখ থেকে সাড়ে ছয় লাখ বাংলাদেশি টাকা) হলে তারা মধ্যবিত্ত বলে গণ্য হতেন।
জার্মানির ব্রেমেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অসমতা ও সামাজিক নীতি নিয়ে গবেষণা করা প্রতিষ্ঠানের প্যাট্রিক জাখভেহ জানান, ওইসিডির হিসেবে জার্মানির প্রায় এক কোটি ৮০ লাখ মানুষ নিম্ন মধ্যবিত্ত (যারা মধ্যবিত্ত শ্রেণির একেবারে শুরুর দিকে আছেন) শ্রেণিতে পড়েন। মূল্যস্ফীতি ও জ্বালানি সংকট তাদের উপর অনেক প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করেন তিনি।
ঋণদাতা ও দেউলিয়াত্ব নিয়ে পরামর্শ দেয়া কোম্পানি ‘ডিয়াকোনিশেস ভ্যার্ক’ ও ‘জার্মান প্যারিটি ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশন অফ নর্থ রাইন ওয়েস্টফালিয়া’ও সেরকম আভাস দিয়েছে। তারা দেখেছে যে, মূল্যস্ফীতি ও জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে আর পেরে ওঠা যাবে না বলে মনে করছে অনেক মানুষ।
ওই দুই সংস্থা জানাচ্ছে, সরকারি বিভিন্ন সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানে কাজ করা ব্যক্তিরা সামাজিক সংকটের উপর প্রশিক্ষণ নেওয়ার আগ্রহ দেখাচ্ছেন। এর মাধ্যমে তারা হতাশাগ্রস্ত ও আতঙ্কিত মানুষকে পরামর্শ দেয়ার যোগ্যতা অর্জন করতে চান।
জনগণের উপর থেকে মূল্যস্ফীতির বোঝা কমাতে জার্মানিসাড়ে ছয় হাজার কোটি ইউরো খরচ করবে বলে গতমাসে জানিয়েছে। শীত মৌসুমে এই অর্থ ব্যয়ের ঘোষণা দিয়েছেন চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস।
এই অর্থ দিয়ে স্বল্প খরচে গণরিবহণে ভ্রমণ এবং জ্বালানি সরবরাহ কোম্পানিগুলো যেন ক্রেতাদের কম খরচে তেল, গ্যাস ও কয়লা সরবরাহ করতে পারে সেজন্য কর ছাড় দেয়া হবে।
মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে চলতি বছর আরো দুটি প্যাকেজ ঘোষণা করেছিল সরকার। এর একটি ছিল পেট্রোলের উপর করছাড় এবং অন্যটি নয় ইউরোর টিকেটে গোটা জার্মানি ভ্রমণের সুযোগ। এই দুই প্যাকেজেরই মেয়াদ শেষ হয়েছে আগস্টে।