বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকারকে সরানো ছাড়া অন্য কোনো পথ খোলা নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শনিবার (৯ অক্টোবর) দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির মিলনায়তনে আয়োজিত আলোচনা সভায় এ মন্তব্য করেন তিনি। জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের ৪৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সংগঠনটি এ আলোচনা সভার আয়োজন করে।
তিনি বলেন, আমাদের সামনে একটাই পথ খোলা আছে, পথ একটাই। সেই পথ হচ্ছে, আমরা এই সরকারকে সরিয়ে দেব। কারণ তারা ইতিমধ্যে প্রমাণ করেছে, বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করছে তারাই। নির্বাচন করতে চায়। কয়েক দিন আগে আবার বলেছে যে, আসেন না নির্বাচন করেন। কোন নির্বাচন করবে? আপনার সেই ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচন করবেন? নির্বাচন এখানে কখনোই হবে না যতক্ষণ পর্যন্ত না একটি নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করা হবে।
ফখরুল বলেন, আমরা সকল রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করছি, তাদেরও আমরা এক কাতারে আনার চেষ্টা করছি। সবার আগে যে কাজটা করতে হবে, প্রধানমন্ত্রীকে পদত্যাগ করে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে।
সংসদ বিলুপ্ত করতে হবে বলে উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, নতুন যে তত্ত্বাবধায়ক সরকার আসবে সেই সরকার নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করবে। তারপর নির্বাচন করার মধ্য দিয়ে নতুন করে পার্লামেন্ট গঠন করা হবে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, এখানে আপনাদের মধ্যে অনেকে আছেন ছাত্রদের পড়ান, তাদের শিক্ষা দেন, আপনাদের দায়িত্ব অনেক বেশি। আপনাদের দায়িত্ব হচ্ছে, জনমতকে সংগঠিত করা, মানুষকে সংগঠিত করা, সত্যের পথে ন্যায়ের পথে।
মির্জা ফখরুল বলেন, আজ একটা অসহনীয় পরিবেশ বিরাজ করছে। আজ মসজিদে পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণ করা হয়। আমি কিছুদিন আগে দেখেছিলাম, এখন আছে কি না জানি না, খুতবা যে হবে এ খুতবাও তারা (সরকার) নির্ধারণ করে দেবে। এর চেয়ে খারাপ কথা আর কী হতে পারে!
তিনি আরও বলেন, কিছুদিন আগে দেখেছি, মসজিদে মসজিদে পুলিশ দাঁড়িয়ে থাকে পোশাকে এবং সাদা পোশাকে। কেন? আমি আমার ধর্ম পালন করব, এটা আমার সাংবিধানিক অধিকার। আমরা যারা স্বাধীনতায় বিশ্বাস করি, ধর্মীয় স্বাধীনতায় বিশ্বাস করি, ধর্মীয় মূল্যবোধে বিশ্বাস করি, আমাদের এখানে মানুষজন সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মধ্যে বাস করে। এখানে আমরা মুসলমানরা আমাদের মতো ধর্ম পালন করেছি, হিন্দু সম্প্রদায় তাদের মতো ধর্ম পালন করেছে, বৌদ্ধরা তাদের মতো করেছে, খ্রিস্টানরা তাদের মতো করেছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, আজ প্রতি পদে পদে, প্রতিটি ক্ষেত্রে এ সরকার দেশটাকে লুট করে বর্গীদের রাজত্ব সৃষ্টি করেছে। বর্গীরা আগে আসত, দখল করত, লুট করে নিয়ে আবার চলে যেত। আজ একইভাবে আওয়ামী লীগের মন্ত্রী, তাদের নেতা, তাদের বংশধররা দেশ লুট করে বাইরে চলে যাচ্ছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, এ সময়ে আমরা যদি সবাই ঐক্যবদ্ধ না হই তাহলে কিন্তু এদের পরাজিত করা যাবে না। এরা ফ্যাসিস্ট শক্তি। আপনারা জানেন যে, এই ফ্যাসিস্ট শক্তিকে পরাজিত করা একটা গণতান্ত্রিক দলের পক্ষে খুবই কঠিন।
ওলামা দলের আহ্বায়ক অধ্যক্ষ শাহ নেছারুল হকের সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম তালুকদার ও জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক মাওলানা মো. সেলিম রেজার সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মীর নাসির উদ্দিন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, কেন্দ্রীয় নেতা আবদুস সালাম আজাদ, নাজিম উদ্দিন আলম, মীর সরাফত আলী, আবদুস সাত্তার পাটোয়ারি, তাঁতী দলের আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।