ইন্দোনেশিয়ায় একটি ফুটবল ম্যাচ শেষে দুই দলের ভক্তদের সংঘর্ষ ও পদদলনে অন্তত ১৭৪ জন নিহত হয়েছেন। ফুটবল ইতিহাসের নজিরবিহীন এই ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও প্রায় ১৮০ জন। রোববার দেশটির কর্তৃপক্ষ বলছে, দাঙ্গায় লিপ্ত ভক্তদের মাঠ থেকে পালানোর চেষ্টার সময় হতাহতের এই ঘটনা ঘটেছে।
রোববার স্থানীয় সময় রাত ৮টার দিকে ইন্দোনেশিয়ার পূর্ব জাভার মালাং শহরের কানজুরুহান স্টেডিয়ামে আরেমা এফসি এবং পারসেবায়া সুরাবায়ার মধ্যে ফুটবল ম্যাচ শুরু হয়। ১০টার পরপর এই দুই দলের খেলা শেষ হয়। এতে স্থানীয় ফুটবল দল আরেমা এফসি ৩-২ গোলে পারসেবায়া সুরাবায়ার কাছে হেরে যায়।
ম্যাচের রেফারি বাঁশিতে চূড়ান্ত ফুঁ দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আরেমা এফসির ক্ষুব্ধ সমর্থকরা চারদিক থেকে মাঠে ঢুকে পড়ে। এক প্রত্যক্ষদর্শীর ধারণ করা ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, মাঠের মাঝেই পুলিশের সাথে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে আরেমার ভক্তরা।
পূর্ব জাভার পুলিশ প্রধান নিকো আফিনতা সাংবাদিকদের বলেছেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করে পুলিশ। এ সময় আতঙ্কিত ভক্তরা বহির্গমন গেট দিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। ছোটাছুটির সময় পদদলন ও দম বন্ধ হয়ে ভক্তদের প্রাণহানির ঘটনা ঘটে।
পুলিশের এই প্রধান বলেছেন, স্টেডিয়ামের ১০ নম্বর গেটে হুমড়ি খেয়ে পড়েন ভক্তরা। আরেমা এফসির এক ভক্তের পোস্ট করা টুইটে বলা হয়েছে, ভক্তরা যখন গেট দিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন তখন পদদলনের ঘটনা ঘটে। এ সময় অনেক নারী ও শিশুর চিৎকার শোনা যায়।
স্থানীয় টেলিভিশন চ্যানেলে প্রচারিত ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, মাঠে সংজ্ঞা হারিয়ে ফেলা ভক্তদের স্টেডিয়ামের বাইরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
এছাড়া স্টেডিয়ামের বাইরে সমর্থক ও পুলিশের মধ্যে ফের সংঘর্ষ হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আসা ভিডিও ও ছবিতে দেখা যায়, স্টেডিয়ামের বাইরে ফুটবল ভক্তদের দেওয়া আগুনে পুড়ছে পুলিশের গাড়ি।
দেশটির প্রধান নিরাপত্তা মন্ত্রী মাহফুদ এমডি ইন্সটাগ্রামে দেওয়া এক পোস্টে বলেছেন, ধারণক্ষমতার চেয়ে স্টেডিয়ামে দর্শকের উপস্থিতি ছিল অনেক বেশি। তিনি বলেন, স্টেডিয়ামে ৩৮ হাজার দর্শকের ধারণক্ষমতা থাকলেও টিকিট বিক্রি করা হয়েছিল ৪২ হাজার।
রোববার সকালের দিকে এক ভিডিও বার্তায় ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদো বলেছেন, ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনকে দেশের শীর্ষ লীগ বিআরআই লিগা-১ এর সব ম্যাচ স্থগিতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ফুটবল ম্যাচগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিতের তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত এই লীগ মাঠে গড়াবে না বলে জানিয়েছেন তিনি।